মার্কিন জাহাজটিতে মিলল নিখোঁজ নাবিকদের লাশ

পণ্যবাহী জাহাজের সঙ্গে মার্কিন নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজের সংঘর্ষের ঘটনায় নিখোঁজ সাত নাবিকের লাশ মিলেছে। সংঘর্ষে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ইউএসএস ফিটজেরাল্ড নামের এই যুদ্ধজাহাজে লাশগুলো মেলে। মার্কিন নৌবাহিনী ও জাপানের গণমাধ্যম এ তথ্য জানায় বলে বিবিসির খবরে বলা হয়। জাপান উপকূলের অদূরে গত শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে দুই জাহাজের সংঘর্ষ হয়। এতে ইউএসএস ফিটজেরাল্ড নামের মার্কিন নৌবাহিনীর অত্যাধুনিক ডেস্ট্রয়ারটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কিছু অংশে পানি ওঠে। আর ফিটজেরাল্ডের সঙ্গে যে পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কা লেগেছে, সেটি ফিলিপাইনের। নাম এসিএক্স ক্রিস্টাল। মার্কিন নৌবাহিনী জানায়, উদ্ধারকর্মীরা জাহাজের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ঢুকে সাত নাবিকের সন্ধান পান। তাঁদের শনাক্ত করার জন্য জাপানের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। মার্কিন নৌবাহিনী বলেছে, সপ্তম নৌবহরের ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী জাহাজটির কমান্ডিং অফিসার ব্রাইস বেনসন এবং দুই নাবিক আহত হয়েছেন। চিকিৎসার জন্য তাঁদের জাপানের ইয়োকোসুকায় অবস্থিত ইউএস নেভাল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় পণ্যবাহী জাহাজটির ২০ জন নাবিকের কেউই আহত হননি। দুই জাহাজের মধ্যে সংঘর্ষের কারণ এখনো অস্পষ্ট। মার্কিন যুদ্ধজাহাজটি বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক যুদ্ধজাহাজগুলোর একটি। সে কারণে এটি কীভাবে ৭৩০ ফুট দীর্ঘ বিশাল বাণিজ্যিক জাহাজটির সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে পারল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ৫০৫ ফুট দীর্ঘ ডেস্ট্রয়ার ফিটজেরাল্ড ১৯৯৫ সালে প্রথম সাগরে নামে। ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের সময় মার্কিন কর্তৃপক্ষ এটি মোতায়েন করেছিল। বর্তমানে এটি জাপানের ইয়োকোসুকা থেকে প্রশান্ত মহাসাগর এবং জাপান সাগরে (পূর্ব সাগর) টহল দেয়। শুক্রবার এতে কয়েকজন নাবিকের পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন। অন্যদিকে এসিএক্স ক্রিস্টাল একটি বাণিজ্যিক পণ্যবাহী জাহাজ। ফিটজেরাল্ডের সঙ্গে সংঘর্ষের আগে এটি টোকিওর উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। ফিলিপাইনের পতাকাবাহী হলেও এসিএক্স ক্রিস্টালের মালিকানা জাপানি প্রতিষ্ঠান এনওয়াইকে লাইনের। জাপানের ইয়োকোসুকা বন্দরনগরে যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহরের ঘাঁটি রয়েছে। এ বহরে আছে প্রায় ৮০টি ডুবোজাহাজ বা সাবমেরিন এবং জাহাজ। দুর্ঘটনার পর ইউএসএস ফিটজেরাল্ড ধীরগতিতে চলে ইয়োকোসুকায় ফিরেছে।জাপানি কোস্টগার্ড বলেছে, দুর্ঘটনার সময় এসিএক্স ক্রিস্টালের ওজন ছিল প্রায় ৩০ হাজার টন, যা ইউএসএস ফিটজেরাল্ডের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি। ধাক্কা লাগার ফলে পণ্যবাহী জাহাজটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে তা মার্কিন জাহাজটির তুলনায় অনেক কম।

No comments

Powered by Blogger.