লন্ডনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৫৮, চাপের মুখে সরকার

লন্ডনের একটি বহুতল ভবন গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য পুলিশ। এদিকে মঙ্গলবার রাতের এই ভয়াব্হ ঘটনার ব্যাপারে যথাযথভাবে সাড়া দিতে ব্যর্থ হওয়ায় যুক্তরাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ ও ক্রোধ ক্রমশই বাড়ছে। এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের শিকারদের যখাযখভাবে সহায়তা দিতে পারেননি বলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তরা তাদের সময়মত সাহায্য করতে ব্যর্থ হবার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো লন্ডনে ডাউনিং স্ট্রীটের সামনে প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের পর কেনসিংটন এলাকায় গ্রেনফেল টাওয়ারের অন্তত ৫৮ জন নিখোঁজ রয়েছে এবং মনে করা হচ্ছে তারা সবাই মারা গেছে। তিনি বলেন, এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে, এবং অনুসন্ধানকাজ শেষ হতে কয়েক সপ্তাহ লাগবে। প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে শনিবার ডাউনিং স্ট্রিটে অগ্নিকাণ্ডের শিকার ও ত্রাণকর্মীদের সাথে এক বৈঠকর পর স্বীকার করেছেন, ঘটনার পর দুর্গত লোকদের সহায়তা ও তথ্য দেবার ক্ষেত্রে যা করা হয়েছে তা যথেষ্ট ছিল না। তিনি তিন সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সবার কাছাকাছি এলাকায় বাড়ির ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন। বিক্ষোভকারীরা এই ঘটনাকে দেখছেন সমাজের দরিদ্রদের প্রতি ধনী এবং ক্ষমতাবানদের অবহেলা এবং উদাসীনতার এক চরম নজির হিসেবে, গ্রেনফেল টাওয়ারের বাসিন্দারা যার মূল্য দিয়েছেন আগুনে পুড়ে মৃত্যুর মাধ্যমে। শুক্রবারের বিক্ষোভের মূল টার্গেট ছিলেন মূলত প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে এবং তার দল ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি। তারা দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট, কেনসিংটন টাউন হল এবং বিবিসির সদর দফতরের সামনে এসে বিক্ষোভ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই এলাকার বহু লোকের ক্রুদ্ধ বক্তব্য এবং সাক্ষাতকার দেখা যাচ্ছে- যারা অত্যন্ত ক্রুদ্ধ ভাষায় তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্য ও ক্ষমতাবানদের অবজ্ঞার অভিযোগ করছেন। তেরেসা মে এই ঘটনার শিকার মানুষদের জন্য যথেষ্ট সহমর্মিতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে দু'দিনের একটানা অভিযোগের পর দূর্গতদের জন্য পঞ্চাশ লাখ পাউন্ড বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু তাতে ক্ষোভ বা সমালোচনা থামার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এরকম এক পটভূমিতে শনিবার রানি এলিজাবেথ তার জন্মদিনে এক বিবৃতি দিয়ে এই ঘটনার পর ব্রিটেন যে দুঃসময় অতিক্রম করছে তা স্মরণ করেছেন। বিবিসির এক সংবাদদাতা বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা যদিও এখনো পর্যন্ত রাজপরিবারের বিরুদ্ধে কোন কথা বলেনি, কিন্তু সামনে যে এ নিয়ে অসন্তোষ আরও বাড়বে, সেব্যাপারে তারা সচেতন। সে কারণেই হয়তো, কোন রাজনৈতিক ক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও রানি এই বিবৃতি দিয়ে ঐক্যের ডাক দিতে চেয়েছেন। সূত্র: বিবিসি

No comments

Powered by Blogger.