চলতি সপ্তাহ জুড়েই বৃষ্টির আশঙ্কা

সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের অনেকের হাতেই বৃহস্পতিবার ঈদের বোনাসের টাকা এসেছে। এ কারণে শুক্রবার শুরু হওয়া ঈদের কেনাকাটা চলতি সপ্তাহে ভরা যৌবন পাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে এসব ক্রেতার জন্য আগাম বার্তা হচ্ছে, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চলতি সপ্তাহ জুড়েই বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা। ফলে বৃষ্টির বিড়ম্বনা মাথায় নিয়েই ঈদ বাজারে ক্রেতাদের যেতে হবে। এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া বিভাগ (বিএমডি)। একই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন স্যাটেলাইট টেলিভিশন দ্য ওয়েদার চ্যানেল। শুধু চলতি সপ্তাহই নয়, ২৬ এবং ২৭ জুনও বাংলাদেশে বজ ঝড় হওয়ার আশঙ্কা আছে। এ দু’দিনের যে কোনো একদিন বাংলাদেশে ঈদুল ফিতরের উৎসব হবে। এদিকে নাসার তথ্যে বলা হয়েছে, পার্বত্য এলাকায় ৩ দিনে বৃষ্টি হয়েছে ৫১০ মিলিমিটার। পঞ্জিকার অনুশাসন অনুযায়ী বাংলার প্রকৃতি এখন বর্ষাকাল অতিক্রম করছে। আজ ৪ আষাঢ়। মূলত বর্ষা ঋতুর আগমনের আগে থেকেই দেশে বৃষ্টি হচ্ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার ঢাকাসহ প্রায় সারা দেশেই কমবেশি বারিপাত ঘটে। বিএমডি দেশের ৪২ স্টেশনে আবহাওয়া পরিস্থিতির তথ্য রেকর্ড করে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ৩৪ স্টেশনেই কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে গোপালগঞ্জে ১৭৪ মিলিমিটার। তবে শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টা ধরলে এ রেকর্ড চলে যায় সীতাকুণ্ডের কাছে। ওই অঞ্চলে ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে বিএমডি। সরকারি এ সংস্থাটি বলছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশে অবস্থিত। যা উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি আকারে বিরাজ করছে। এ কারণে ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ সহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। বিএমডির আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান খান বলেছেন, ভারি বর্ষণের কারণে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা আছে। এদিকে ওয়েদারডটকম বলেছে, শুধু চলতি সপ্তাহই নয়, ২৬ এবং ২৭ জুনও বাংলাদেশে বজ ঝড় হওয়ার আশঙ্কা আছে। এ দু’দিনের যে কোনো একটিতে বাংলাদেশে ঈদুল ফিতরের উৎসব হবে। পার্বত্য এলাকায় ৫১০ মিলিমিটার বৃষ্টি : বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ১২ থেকে ১৪ জুনের মধ্যে ৫১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। ওই বৃষ্টিতে পাঁচ জেলায় ব্যাপক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এতে সেনাসদস্যসহ দেড় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারান। শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে নাসা আরও জানায়, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টির সঙ্গে পার্বত্য এলাকায় ধস অব্যাহত থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে গডরাড স্পেস ফ্লাইট সেন্টার থেকে বৃষ্টিপাত পরিমাপ করে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি। এর জন্য ‘নিয়ার-রিয়েল টাইম ইন্টিগ্রেটেড মাল্টি স্যাটেলাইট রিট্রাইভালস ফর জিপিএম’ তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। জিপিএম হল গ্লোবাল পার্সিপিটেশন মেজারমেন্ট মিশন স্যাটেলাইট। নাসা ও জাপানের অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি একগুচ্ছ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এ ব্যবস্থাটি নিয়ন্ত্রণ করে। পার্বত্য এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ বর্তমানে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছেন। এ দুর্যোগে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাঙ্গামাটি। এখানে মৃতের সংখ্যা শতাধিক।

No comments

Powered by Blogger.