স্বজনের দাবি, রাজনৈতিক কারণেই আমির খুন হন

‘হ্যার কোনো দোষ আছিল না। একটাই দোষ, রাজনীতি করত। হেইডাই খাইছে হ্যারে।’ গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেলের মর্গের সামনে এভাবেই বিলাপ করছিলেন ঢাকা-১৬ আসনের সাংসদ ইলিয়াস মোল্লাহর ব্যক্তিগত সহকারী আমির হোসেনের স্ত্রী নাসরিন বেগম।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড় এলাকায় চলন্ত মাইক্রোবাস থেকে ফেলে আমিরকে হত্যা করে। পুলিশ বলছে, কারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, সে ব্যাপারে এখনো কোনো সূত্র মেলেনি। তবে স্বজনেরা বলছেন, রাজনৈতিক কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
নিহত ব্যক্তির বড় ভাই আবদুল হান্নান জানান, আমির হোসেন আসবাবপত্রের ব্যবসা করেন। প্রায় ২০ বছর ধরে পরিবার নিয়ে পল্লবী এলাকায় বাস করছিলেন। এখানে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ওঠাবসা শুরু করেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা ও বর্তমান সাংসদ ইলিয়াস মোল্লাহর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় আমিরের। সাত-আট বছর ধরেই ইলিয়াস মোল্লাহর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে আমির কাজ করতেন বলে সবাই জানেন। আমির পল্লবী ৫ নম্বর ওয়ার্ড (পুরোনো) যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। সর্বশেষ পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের সদস্যপদও পান। রাজনৈতিক কারণেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন হান্নান।
আমিরের স্ত্রী বলেন, তাঁর কোনো ব্যবসায়িক শত্রু ছিল না। তিনি বলেন, ‘রাজনীতিই তারে খাইছে।’ তবে স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জমিসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য অনেকে তাঁর কাছে আসতেন। টাকার বিনিময়ে অনেককেই তিনি জমির দখল নিতে সাহায্য করেছেন। আবার সাংসদের মাধ্যমে অনেক তদবিরও করতেন আমির।
পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারওয়ার কবির জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা লাশ দাফন করতে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে গেছেন।
পুলিশ সূত্রগুলো জানায়, আমিরের মুঠোফোন যোগাযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সন্ধ্যার দিকে শেষবারের মতো স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়। তখন তিনি মতিঝিলে আছেন বলে স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন। কেন, কাদের সঙ্গে তিনি সেখানে গেলেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
অন্যদিকে পল্লবী থানার ওসি আবদুল লতিফ শেখ জানান, আমিরকে সব সময়ই সাংসদ ইলিয়াসের সঙ্গে দেখা যেত। তবে পল্লবী এলাকা থেকে আমিরকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।

No comments

Powered by Blogger.