বিদেশি গণমাধ্যমে হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর খবর

জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর খবর বেশ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে বিদেশি গণমাধ্যমগুলোও। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে তো বটেই, ভারত-পাকিস্তানের পাশাপাশি জাপানের পত্রপত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় এ সংবাদ বেশ গুরুত্ব পেয়েছে।


একইসঙ্গে ইন্টারনেটে ফেসবুক, টুইটার ও ব্লগে এই কিংবদন্তির মৃত্যু নিয়ে দেদার লেখালেখি চলছে।
ভারতের জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, "ক্যান্সার কেড়ে নিল বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদকে (৬৪)। ...'নন্দিত নরকে' দিয়ে যাত্রা শুরু। হুমায়ূনের উপন্যাসের সংখ্যা দুশোরও বেশি। নাট্যকার হিসেবেও জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। পরিচালনা করেন কয়েকটি ছবিরও। তবে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন 'বেস্ট সেলার' উপন্যাসের নিপুণ শিল্পী হিসেবেই। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে জুড়ি নেই তাঁর।"
বিবিসি বাংলা সংস্করণে শিরোনাম করা হয়েছে 'হুমায়ূন আহমেদের প্রয়াণে বাংলাদেশ শোকস্তব্ধ'। ছবিসহ ছাপানো প্রতিবেদনে তাঁর জীবনের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
সিএনএন বাংলা সংস্করণে শিরোনাম করা হয়েছে 'দেশবরেণ্য কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ আর নেই, দেশজুড়ে শোকের ছায়া'। এতে বলা হয়েছে, 'সমকালীন বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র, কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর খবরে দেশের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। অতুলনীয় জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও তিনি অন্তরাল জীবনযাপন করতেন এবং লেখালেখি ও চিত্রনির্মাণের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠসূচির অন্তর্ভুক্ত।'
নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বাংলা পত্রিকা 'এখন সময়' বেশ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে সংবাদটি। 'নন্দিত জীবন পাড়ি দিলেন হুমায়ূন আহমেদ' শিরোনামে প্রতিবেদনে লেখা হয়, 'হুমায়ূন সৃষ্ট মিসির আলি ও হিমু পাঠকদের প্রিয় চরিত্র। তিনি প্রধানত সংলাপনির্ভর উপন্যাসে মধ্যবিত্ত জীবনের নিস্পন্দ রোমান্টিকতাকে নিখুঁতভাবে তুলে এনেছেন। তাঁকে কবি শামসুর রাহমান লিখেছিলেন, অনেক উৎকৃষ্ট রচনাই অত্যন্ত জনপ্রিয়। হুমায়ূন আহমেদ আমাদের সস্তা চতুর্থ শ্রেণীর লেখকদের হাত থেকে মুক্তি দিয়েছেন।'
ইরান বাংলা রেডিওর প্রথম পাতাতেই স্থান পেয়েছে হুমায়ূনের মৃত্যু সংবাদ। সেখানে বলা হয়, '১৯৪৮ সালে জন্ম নেওয়া হুমায়ূন আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই লেখালেখি শুরু করে সাহিত্য সমালোচকদের মনোযোগ আকর্ষণ করেন। তারপর ধীরে ধীরে দেশের জনপ্রিয়তম কথাসাহিত্যিকে পরিণত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক।'
কানাডা থেকে প্রকাশিত বেঙ্গলি টাইমসে 'কিংবদন্তিসম ব্যক্তিত্ব, জননন্দিত লেখক হুমায়ূন আহমেদ আর নাই' শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়।
অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত ইংরেজি পত্রিকা 'প্রিয় অস্ট্রেলিয়া'য় 'রিমেম্বারিং হুমায়ূন আহমেদ' শিরোনামে খবরটি স্থান পায়। এ ছাড়া সিডনি বাংলাতেও এ খবর ছাপা হয় বেশ গুরুত্ব দিয়ে।
পাকিস্তানের বহুল প্রচারিত জনপ্রিয় দৈনিক ডনের শিরোনামে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশ মোনস ডেথ অব কালচারাল লিজেন্ড হুমায়ূন আহমেদ'। ছবিসহ হুমায়ূন আহমেদের জীবনের বিভিন্ন দিক প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তান ডিফেন্স শিরোনাম করেছে 'হুমায়ূন আহমেদ ডাইস'। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপিও গুরুত্বসহকারে সংবাদটি প্রকাশ করেছে।

No comments

Powered by Blogger.