ভুয়া তালিকা করে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের চেষ্টা

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার এক কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে হিন্দু শিক্ষার্থীদের ভুয়া তালিকা তৈরি করে উপবৃত্তির টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকজন এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ ডাকযোগে সংশ্লিষ্ট চারটি দপ্তরে পাঠিয়েছেন।


তবে অধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এ ধরনের দুর্নীতি করেছেন। তবে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অধ্যক্ষই টাকা তুলে পরে ফেরত দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কলেজ পর্যায়ের হিন্দু শিক্ষার্থীদের জন্য তফসিলি উপবৃত্তি মঞ্জুর করে। একই সঙ্গে উপবৃত্তির জন্য মনোনীত হিন্দু শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়। এদিকে এ-সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের কোনো চিঠি নওগাঁর আত্রাইয়ের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার দপ্তরে পৌঁছার আগেই স্থানীয় কছির উদ্দিন দেওয়ান মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ একটি ভুয়া চিঠি ও তাঁর প্রতিষ্ঠানের ৫২ জন হিন্দু শিক্ষার্থীর নামের তালিকা সেখানে উপস্থাপন করেন।
তিনি চিঠিটি হাতে হাতে দ্রুত নিয়ে এসেছেন বলে দাবি করে ২০১১-১২ রাজস্ব বাজটের বরাদ্দ থেকে তাঁর শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়ার জন্য উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে বলেন। এসব চিঠি ও তালিকায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার সহকারী পরিচালক, উপপরিচালক, ভারপ্রাপ্ত পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার স্বাক্ষর রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের প্রধান স্থানীয় হিসাব কর্মকর্তার সহযোগিতায় গত ২৩ জুন ৫২ জন শিক্ষার্থীর এক হাজার ৫০০ টাকা করে মোট ৭৮ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। প্রতিষ্ঠানের অন্য ব্যক্তিরা বিষয়টি জানার পর টাকা উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে অধ্যক্ষ ওই টাকা আবার ফেরত দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, অধ্যক্ষ নিজেই প্রতিষ্ঠানের হিন্দু শিক্ষার্থীদের নামের ভুয়া তালিকা তৈরি করে টাকা উত্তোলন করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ওই প্রতিষ্ঠানে মাত্র নয়জন হিন্দু শিক্ষার্থী আছে। অন্য ৪৩ জনের কোনো অস্তিত্ব নেই এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও তাদের নাম পাওয়া যায়নি।
অধ্যক্ষ ফরিদুল ইসলাম জানান, এ ধরনের কোনো টাকা তিনি তোলেননি। টাকা তোলার ফরমে তাঁর স্বাক্ষর রয়েছে—এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘ওটা আমার স্বাক্ষর নয়, কেউ জাল করে টাকা ওঠাতে পারে। এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।’ আত্রাই উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, ‘ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে টাকা দেওয়া হয়েছে। পরে সন্দেহ হলে চিঠি দিয়ে টাকা ফেরত নেওয়া হয়েছে। এখন তিনি অস্বীকার করলে তো কিছু করার নেই।’

No comments

Powered by Blogger.