গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত স্থগিত

গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। আজ শনিবার বুয়েট শিক্ষক সমিতি জরুরি সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষক সমিতির সভাপতি মজিবুর রহমান প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, বুয়েটের সাবেক উপাচার্য ও কৃতী সাবেক শিক্ষার্থীরা একটি চিঠি দিয়ে শিক্ষক সমিতিকে


গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য বলেছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে আজ সমিতির জরুরি সাধারণ সভায় গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়। তিনি বলেন, ‘সরকারের উদ্যোগের প্রতি আস্থা রেখে স্থগিত করছি। পরবর্তী সময়ে সাধারণ সভা করে পরবর্তী করণীয় ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এ সিদ্ধান্ত আন্দোলন থেকে পিছু হটে যাওয়া কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলেন, ‘এটা পিছু হটা না। সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার প্রতি সম্মান রেখে সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে।’
শিক্ষক সমিতি বেলা সাড়ে ১১টায় জরুরি সাধারণ সভায় বসে। দুপুর একটা পর্যন্ত এ সভা চলে।
শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ আতাউর রহমান প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, বুয়েটের সাবেক তিন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মতিন পাটোয়ারী, মোশাররফ হোসেন খান ও ইকবাল মাহমুদ এবং অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশেন সভাপতি জামিলুর রেজা চৌধুরী ও সহ-সভাপতি স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন শিক্ষক সমিতিকে একটি চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তাঁরা বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে গত সোমবার তাঁদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ও বিভাগীয় প্রধানদের যে বৈঠক হয়েছিল, সেখানে তাঁরা উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের অপসারণের বিষয়ে কথা বলেছেন। অপসারণের প্রক্রিয়া চলমান আছে। সে ক্ষেত্রে কাল রোববার গণপদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান ওই চিঠিতে জানানো হয়। ওই চিঠির বিষয় নিয়ে গতকাল শুক্রবার রাতে শিক্ষক সমিতির কার্যকরী কমিটির জরুরি সভায় আজ সাধারণ সভা ডাকা হয়। ৩০ জুলাই শিক্ষক সমিতি সাধারণ সভা করতে পারে বলে তিনি জানান।
এদিকে বুয়েটের উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে অপসারণ না করায় দুই দিন বিরতির পর আজ থেকে আবার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
সূত্রমতে, গত সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় বুয়েটের সাবেক উপাচার্য, কৃতী সাবেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিয়ে সংকট নিরসনে আলোচনার জন্য সভা আহ্বান করে। ওই সভা শেষ হওয়ার পর শিক্ষক সমিতি উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে অপসারণ না করলে রোববার গণপদত্যাগের ঘোষণা দেয়। সূত্রমতে, আলোচনার বিষয়বস্তু প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরার আগেই এ ধরনের কর্মসূচিতে তিনি বিরক্ত হন। শিক্ষকদের আন্দোলনের ফলে প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার যে মনোভাব তৈরি হয়েছিল তাতে পরিবর্তন আসে।
বুয়েটের উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে গত ৭ এপ্রিল থেকে শিক্ষক সমিতি কর্মবিরতি শুরু করে। লাগাতার ২৮ দিন কর্মবিরতির পর ৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকেরা ৫ মে থেকে আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করেন। গত ৯ জুন সমিতির সভায় ৩০ জুনের মধ্যে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এর মধ্যে তাঁরা পদত্যাগ না করায় ৭ জুলাই থেকে প্রতীকী কর্মবিরতি চলতে থাকে। ১৪ জুলাই তাঁরা লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। গত সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সভা ডাকে। দুই দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত হয় এবং শিক্ষকেরা রোববার গণপদত্যাগের ঘোষণা দেন।

No comments

Powered by Blogger.