বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রস্তুতি

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আসর বসছে। উপমহাদেশের অন্য দুই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশও এই ক্রিকেট মহাযজ্ঞের আয়োজক। বিশ্বকাপ ক্রিকেটকে উপলক্ষ করে বাংলাদেশে ১৯২টি দেশের সাংবাদিক-মিডিয়াকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের আগমন ঘটবে ঢাকায়। এরই মধ্যে বিশ্বকাপ ট্রফি এসে গেছে ঢাকায়।


বৃহস্পতিবার ঢাকার পথে ঘুরেছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ট্রফি। আয়োজক দেশ হিসেবে ক্রিকেটের এই বৃহৎ আসরকে সফল করতে হবে। তেমনি রাজধানী ঢাকাকেও দর্শনীয় করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রামের গণপরিবহনের সাজসজ্জাও পাল্টে যাচ্ছে। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আয়োজন সফল করতে সব ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রাস্তা থেকে ভিক্ষুক সরিয়ে দেওয়া, ভাসমান লোকদের ভবঘুরে কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াসহ অনেক পরিকল্পনা আছে সরকারের। রাজধানীর ২৫টি সড়ক নতুন করে সাজানো হবে। বিশ্বকাপ ক্রিকেট উপলক্ষে রাজধানীর এই ২৫টি সড়কের সৌন্দর্যবর্ধন কাজের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানিয়েছে, নতুনভাবে সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যমে রাস্তা, পাশের ফুটপাত এবং ডিভাইডারগুলো আবার ঝকঝকে হয়ে উঠবে। নানা রঙে রঙিন হয়ে উঠবে। কোনো ময়লা-আবর্জনা জমে থাকবে না। রোড ডিভাইডারে নতুন করে গাছ লাগানো ছাড়াও বেঁচে থাকা গাছগুলো কেটেছেঁটে কেয়ারি করে বাউন্ডারি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হবে। সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে এরই মধ্যে বেশ কিছু রাস্তা ও ফুটপাত উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু যেখানে খেলা হবে, সেই মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হচ্ছে না। হ্যাঁ, স্টেডিয়াম প্রস্তুত। প্রস্তুত স্টেডিয়ামের গ্যালারিও। কিন্তু যাঁরা খেলা উপভোগ করতে যাবেন, তাঁদের গাড়ি কোথায় পার্কিং হবে, তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এ বিষয়টি কারো মাথায় আছে কি না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মতো বড় যেকোনো খেলার আসর হলে বাড়তি যানবাহনের চাপ মোকাবিলায় এ রকম একটি পার্কিং জোন থাকা অপরিহার্য_এটা সবাই মানবেন। এই স্টেডিয়ামের জন্যও একটি পার্কিং জোন মূল নকশায় ছিল; কিন্তু বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। স্টেডিয়ামের জন্য বরাদ্দকৃত ওই পার্কিং স্পেসে গাড়ি রাখার কোনো বন্দোবস্তই নেই। পুরো জায়গাটা জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় কিছু লোক দখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁরা টিনশেড বা সেমিপাকা ঘর তুলে প্রতি মাসে অন্তত ১০ লাখ টাকা ভাড়া হিসেবে তুলে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশ্বকাপ আয়োজনে ব্যাপক সংস্কার এবং নির্মাণযজ্ঞ চললেও পার্কিং স্পেসের কথাটা যেন কারো মাথায়ই আসেনি।
জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্রণীত নকশায়ও জায়গাটি স্টেডিয়ামের পার্কিং স্পেস হিসেবে চিহ্নিত আছে। প্রধান সড়ক থেকে একটি উপসড়কও ঢুকে গেছে পার্কিং স্পেসে। গাড়ি ঢোকার সেই উপসড়কেরও কিছু জায়গা দখল করে নিয়েছে দখলদাররা। আপাতদৃষ্টিতে ক্ষুদ্র মনে হলেও পুরো এলাকার এক সুশৃঙ্খল ও নয়নাভিরাম সিনারিওর জন্য এই পার্কিং স্পেসের ব্যাপারটি মোটেই ক্ষুদ্র নয়; বড় রকম সমস্যাই।

No comments

Powered by Blogger.