রেন্টালে না গেলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতো by ম. তামিম

আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্যাসের মজুদ না থাকার কারণেই সরকারকে রেন্টাল বিদ্যুতের দিকে যেতে হয়েছে। এই ঘাটতিটা শুরু মূলত ২০০৭ সাল থেকে। সরকারকে তাই দ্রুত বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে গিয়ে রেন্টাল বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হয়েছে, যদিও রেন্টাল বিদ্যুৎও ব্যয়বহুল। কিন্তু তার পরও কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না।


এই শর্ট টার্ম ব্যবস্থা না করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করত। তবে সরকার বড় আকারের প্রকল্পের জন্য পদক্ষেপ নিতে দেরি করে ফেলেছে। আমরা তেলভিত্তিক যে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করছি, সেখানে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তেলের চড়া মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গেলে সরকারকে ফতুর হয়ে যেতে হবে। সুতরাং সরকারের জন্য সহজে এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে না। এটা কষ্টসাধ্যই।
আরো সমস্যা রয়েছে। বর্তমানে পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। এগুলো মেরামত খুবই ব্যয়বহুল। কোনো কোনোটি মেরামতেরও অযোগ্য। এখন বিএমআরই বা ছোটখাটো পদ্ধতিতে বিদ্যুতের সমাধান করা যাবে বলে মনে করছি না। অন্যদিকে বাইরে থেকে তেল এনে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এখন দীর্ঘমেয়াদি উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে। আর সেটা করতে হলে প্রয়োজন ভারী বিনিয়োগের। এই ভারী বিনিয়োগের জন্য কেউ কমপক্ষে ১০ বছরের গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা না পেলে এগিয়ে আসবে না। সে নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না। এখন সরকারকেই সেই বিনিয়োগের দিকে এগোতে হবে। এবং নজর দিতে হবে দেশীয় জ্বালানির দিকে। সাশ্রয়ী বিদ্যুতের দিকে। অর্থাৎ কয়লা, গ্যাস অথবা পারমাণবিক। এ ছাড়া বায়ুবিদ্যুৎ আমাদের দেশে সম্ভব নয়। তা নিয়ে কথা বলে লাভ নেই। এর মধ্যে কয়লার ব্যাপারটি সবচেয়ে বাস্তবসম্মত।
কিন্তু মনে রাখতে হবে, এগুলো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ। তাই স্বল্প সময়ের মধ্যে আপাতত চাহিদা যতটা মেটানো যায় ততটা মেটাতেই সরকারকে চড়া মূল্যে হলেও রেন্টাল বিদ্যুতের দিকে যেতে হয়েছে।
অতিরিক্ত গ্যাস উত্তোলন সম্ভব। তাতে হয়তো শিল্প-কারখানায় সরবরাহ দেওয়া যেত। কিন্তু সমস্যা হলো, মজুদ তো সীমিত। এ মজুদ ফুরিয়ে গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.