ঢাকা সিটি নির্বাচন-আজ মধ্যরাতের মধ্যে প্রচার উপকরণ সরানোর নির্দেশ

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ডসহ সব নির্বাচনী প্রচারণামূলক উপকরণ আজ বুধবার রাত ১২টার মধ্যে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল করতে পারে। কারণ, আইন অনুযায়ী এ ধরনের প্রচারণা অবৈধ।


গতকাল মঙ্গলবার ইসি এ আদেশ জারি করেছে।
ইসি তফসিল ঘোষণার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর সম্ভাব্য প্রার্থীদের উদ্দেশে এ আদেশ জারি করেছে। এ কারণে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা কার্যত প্রায় দুই দিন বিধিবহির্ভূত প্রচারণার সুযোগ পেলেন। এরই মধ্যে প্রার্থীরা পরোক্ষ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেছেন।
নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রচারণা চালানো যাবে না। ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২ মে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হবে। অর্থাৎ, ওই দিন বিকেল পাঁচটার পর থেকে প্রার্থীরা প্রচারণার সুযোগ পাবেন।
ইসি সচিবালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে কোনো ব্যক্তি ভোট গ্রহণের দিন থেকে ২১ দিনের আগে কোনো প্রচারণা চালাতে পারবেন না। প্রচারণার ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের দেয়াল, স্থাপনা, বেড়া এবং যানবাহনে কোনো ধরনের পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগাতে পারবেন না। তবে পোস্টার ও লিফলেট ঝোলানো যাবে।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন উপলক্ষে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ কেউ পোস্টার, লিফলেট, স্টিকার, ব্যানার ও বিলবোর্ডের মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ধরনের কাজ নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ১১ এপ্রিল (আজ বুধবার) রাত ১২টার মধ্যে এসব প্রচার-উপকরণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিজ দায়িত্বে অপসারণ বা মুছে ফেলতে হবে। নির্ধারিত সময়ের পর কোনো প্রচারণামূলক উপকরণ দেখা গেলে আচরণবিধি অনুযায়ী তা শাস্তিমূলক অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এ ধরনের অপরাধের জন্য ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান আছে। তা ছাড়া বিধান অনুযায়ী এ ধরনের অপরাধের জন্য ইসি প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলও করতে পারে।
এ বিষয়ে গতকাল নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর সব ধরনের নির্বাচনী প্রচারপত্র অবৈধ হয়ে গেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোস্টার-বিলবোর্ড লাগানো উচিত হয়নি। তবু আমরা তাঁদের কাল (বুধবার) রাত ১২টা পর্যন্ত ছাড় দিলাম। এ সময়ের মধ্যে প্রচার-উপকরণ অপসারণ না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রচারণার বিধান: গতকাল ইসির এক পরিপত্রে বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী জনসভা বা শোভাযাত্রা করতে পারবেন না। তবে পথসভা করতে পারবেন। প্রচারণার জন্য বেলা দুইটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত মাইক ব্যবহার করা যাবে। একজন প্রার্থী একসঙ্গে পথসভার জন্য একটি এবং প্রচারণার জন্য একটির বেশি মাইক ব্যবহার করতে পারবেন না।
ইভিএম ব্যবহার হবে: নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী গতকাল প্রথম আলোকে বলেছেন, ডিসিসি নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার হবে।
ইসি সূূত্র জানায়, গতকাল বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত কমিশনের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী দুটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে এক হাজার ইভিএম পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করার কথা।
ইভিএমের জন্য ব্যাটারি আমদানির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে জাবেদ আলী বলেন, ‘ব্যাটারি কোন উপায়ে আনা হবে, তা আপনাদের জানার দরকার নেই। বিষয়টি সরকারের নিরীক্ষা বিভাগ দেখবে। সত্যতা হলো, ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে।’
এর আগে ইসি থেকে বিএমটিএফকে গণ খাতে ক্রয় আইন অনুযায়ী ব্যাটারি আমদানি করে এক হাজার ২০০ ইভিএম ব্যবহারোপযোগী করে সরবরাহ করতে বলা হয়েছিল। এর জবাবে ৫ এপ্রিল বিএমটিএফ জানায়, ওই আইন অনুযায়ী চীন থেকে ইভিএমের ব্যাটারি আমদানি করতে হলে ১০ এপ্রিলের মধ্যে ঋণপত্র খুলতে হবে। তা উড়োজাহাজযোগে আনা হলেও ১৭ মে লেগে যাবে। এ সময়ের মধ্যে ব্যাটারি আমদানি করা হলে তা ডিসিসি নির্বাচনে ব্যবহার করা সম্ভব হবে না।

No comments

Powered by Blogger.