আমার পহেলা বৈশাখ by বিনোদ বিহারী চৌধুরী

এ সুদীর্ঘ সময়ের মধ্যে কোন দিনের উৎসব সবচেয়ে বেশি মনে দাগ কেটেছে, সেটা স্মরণে রাখা কঠিন বৈকি। শৈশবের দিনগুলোর কথাই বলি। এদিন এলেই দেহমনে বিশেষ আনন্দের অনুভূতি হয়। সাধারণ ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান থাকলেই এমনটি হয়ে থাকে।


পহেলা বৈশাখ আনন্দের দিন

জীবনে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পালনের জন্য একশ'বারের বেশি সময় পেয়েছি, এর চেয়ে সৌভাগ্য আর কী হতে পারে। এ সুদীর্ঘ সময়ের মধ্যে কোন দিনের উৎসব সবচেয়ে বেশি মনে দাগ কেটেছে, সেটা স্মরণে রাখা কঠিন বৈকি। শৈশবের দিনগুলোর কথাই বলি। এদিন এলেই দেহমনে বিশেষ আনন্দের অনুভূতি হয়। সাধারণ ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান থাকলেই এমনটি হয়ে থাকে। পহেলা বৈশাখ আনন্দের দিন। কোনো ধর্মীয় দিন নয়। তারপরও মনে হয় পবিত্রতম দিন। আগের বছরের ভুল-ভ্রান্তি ও খারাপ কিছু দূরে ঠেলে দিতে হয়। সবসময় ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলাম মা-বাবা ও শিক্ষকের কাছ থেকে। এদিনে ঘরবাড়ি, সিন্দুক ও টেবিল ফুল দিয়ে সাজানো হয়। সকালেই স্নান করে নতুন কাপড় পরি। ছোটবেলা থেকেই দেখছি, বছরের প্রথম দিনে সবাই নতুন কাপড় পরত। এখনও এ রেওয়াজ রয়েছে এবং বলতে পারি যে আরও বাড়ছে। খরচ করার সঙ্গতিও বেশিরভাগ মানুষের আগের চেয়ে বেশি। শৈশবে দেখেছি, শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি উৎসব হতো। অনেক ধুমধাম করে গ্রামে পালিত হতো পহেলা বৈশাখ। অবশ্য তখন শুধু হিন্দুরাই পালন করত পহেলা বৈশাখ তথা বাংলা নববর্ষ। এখন এ উৎসব সবার_ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তারা শামিল হয়ে যায়। ধনী-গরিবেও ভেদাভেদ নেই।
আগে দেখেছি, ১৮ রকমের তরকারি দিয়ে রান্না করা হতো বিশেষ নিরামিশ। ১৮ রকমের তরকারি দিয়ে রান্না করা হতো বলে চট্টগ্রামে এর আঞ্চলিক নাম ছিল আডোউরা। সেই আডোউরা খুব মজা লাগত। এর পুষ্টিগুণও ছিল অনেক। তিন-চার বাড়ি থেকে আমাদের বাড়িতে পাঠানো হতো আডোউরা। পুরো দিনটাই কেটে যেত।

স বিনোদ বিহারী চৌধুরী :মাস্টারদা সূর্য সেনের সহকর্মী

No comments

Powered by Blogger.