ঢাকা সিটি নির্বাচন-খুনখারাবির আতঙ্ক ৫ নির্দেশনা নিয়ে মাঠে পুলিশ by ওমর ফারুক

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য খুনখারাবি ঠেকাতে বিশেষ অভিযানে মাঠে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্স থেকে কয়েক দিন আগে রাজধানীর ৪৪টি থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) পাঁচটি নির্দেশ মেনে অভিযান চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা


কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন। গত ১০ এপ্রিল থেকে সেই নির্দেশনা মাথায় নিয়ে অভিযান শুরুও করেছে পুলিশ। পাঁচটি নির্দেশনার মধ্যে আছে- সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার ও থানা এলাকায় নতুন কাউকে দেখা গেলে তার ব্যাপারে খোঁজখবর রাখা।
পুলিশ সূত্র জানায়, উল্লিখিত কাজগুলো পুলিশ সাধারণ কাজ হিসেবেই করে থাকে।
কিন্তু সুষ্ঠুভাবে ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সম্পন্ন করা এবং যেকোনো ধরনের হত্যাকাণ্ড রোধে এই বিশেষ অভিযানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রতিদিন প্রতিটি থানার পুলিশ সদস্যদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন এলেই রাজধানীতে খুনখারাবি বা প্রতিপক্ষের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ওই অভিজ্ঞতা থেকেই পুলিশ এবার আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য যাঁরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেশাদার খুনিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
তবে এখন পর্যন্ত কোনো পেশাদার খুনিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়নি। ডিবির জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিশেষ অভিযানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই অভিযানে সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার, মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তরের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।'
ডিবির সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার নাসির উদ্দিন খান বলেন, 'আগের অবস্থা এখন আর নেই। আগেরবার ডিসিসি নির্বাচনের আগে দেশে নামকরা সব প্রফেশনাল কিলার ছিল। আমাদের তৎপরতার কারণে এদের কেউ দেশের বাইরে চলে গেছে, কেউ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছে।'
ধানমণ্ডি থানার ওসি মনিরুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিশেষ অভিযানের নির্দেশ পাওয়ার পর থেকেই আমরা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি।'
পুলিশ সূত্র জানায়, ২০০২ সালে ডিসিসি নির্বাচনের আগে কয়েকজন হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। ওই সময় ডিসিসি নির্বাচনের আগে রাজধানীতে সন্ত্রাসীদের সেভেন স্টার ও ফাইভ স্টার গ্রুপ ছিল। শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, তানভিরুল ইসলাম জয়, টোকাই সাগর, মোল্লা মাসুদ, টিক্কা, চঞ্চলসহ সাতজন মিলে সেভেন স্টার গ্রুপ গড়ে তুলেছিল। সন্ত্রাসী আগা শামীমের নেতৃত্বে গঠিত হয় ফাইভ স্টার গ্রুপ। এই গ্রুপের বাইরে শীর্ষ সন্ত্রাসী ছিল পিচ্চি হান্নান, কিলার আব্বাসের মতো সন্ত্রাসী। যে কারণে পুলিশ সেভাবে অপরাধ রোধ করতে পারেনি। র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর ক্রসফায়ারে কয়েকজন কুখ্যাত খুনি নিহত হয়। আর ক্রসফায়ারের ভয়ে অনেকে বিদেশে পালিয়ে যায়। এক পুলিশ কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'রাজধানীতে কারা কিলার হিসেবে কাজ করছে তাদের খুঁজে বের করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।'

No comments

Powered by Blogger.