কমিউনিটি বেতারের প্রসার ঘটুক-প্রত্যন্ত অঞ্চলের জরুরি তথ্যসেবা

মূলধারার সংবাদমাধ্যমের সেবা থেকে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর দরিদ্র মানুষের জন্য কমিউনিটি রেডিও কত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, তার প্রত্যক্ষ দৃষ্টান্ত পাওয়া গেল বুধবারের ভূমিকম্পের সময়।
ঝড়ের কারণে দক্ষিণাঞ্চলের বরগুনা জেলায় চার দিন ধরে বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ ছিল।


ফলে টেলিভিশন দেখতে পারছিল না সেখানকার মানুষ। বুধবার দুপুরে কয়েক দফা ভূকম্পন অনুভূত হওয়ার পর বিকেলে রেড ক্রিসেন্টের স্থানীয় কর্মীরা মাইকে সুনামির সতর্কবার্তা প্রচার করেন। মানুষের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হয় এবং তারা ছুটতে শুরু করে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে। কিন্তু মাইকের প্রচারণা বেশি এলাকায় পৌঁছে না; পর্যাপ্ত তথ্যও মাইকের ঘোষণায় থাকে না। ফলে রাত বাড়লে মানুষের মধ্যে ভীতি আর অনিশ্চয়তা বাড়তে থাকে।
এমন পরিস্থিতিতে বরগুনার কমিউনিটি রেডিও ‘লোক বেতার’ ও একই জেলার আমতলী উপজেলার কমিউনিটি রেডিও ‘কৃষি রেডিও’ থেকে ক্রমাগত হালনাগাদ তথ্য সম্প্রচার করা হলে কিছু মানুষের জন্য তথ্যের সংকট কেটে যায়। কিন্তু এই দুটি এফএম বেতারকেন্দ্র যে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কাছে এখনো পরিচিত বা সহজগম্য হয়ে ওঠেনি, তা বোঝা যায় রেড ক্রিসেন্টের মাইকের প্রচারণা থেকে।
ওই দুটি কমিউনিটি রেডিওর সম্প্রচার শুরু হয়েছে সম্প্রতি, এখনো তারা পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। তাই সব মানুষের কাছে পৌঁছেনি। আশা করা যায়, ধীরে ধীরে তাদের সম্প্রচারের সময় বাড়বে এবং আরও বেশিসংখ্যক মানুষের কাছে তাদের পরিচয় পৌঁছে যাবে। ওই এলাকার মানুষ, যারা রেডিও দুটি সম্পর্কে ইতিমধ্যে জানে, তারা এদের উপকারিতা ইতিমধ্যেই টের পেয়েছে। বরগুনার একজন বলেছেন, ওই অঞ্চলে যদি আরও আগেই কমিউনিটি রেডিও স্থাপন করা হতো, তাহলে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডরে প্রাণহানি অনেক কম হতো।
অবশ্য শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সতর্ক-সংবাদ বা আবহাওয়ার খবরাখবরের মধ্যেই উপকূলীয় কমিউনিটি রেডিওর ভূমিকা সীমাবদ্ধ থাকবে না। স্থানীয় মানুষের অর্থনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবনের সমস্ত বিষয়েই তথ্যভিত্তিক, শিক্ষা-বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানও প্রচার করা উচিত। তবেই কমিউনিটি রেডিওর জনপ্রিয়তা বাড়বে।

No comments

Powered by Blogger.