সম্পদের হিসাব by আল-আমিন পলাশ

'সাহস থাকলে আপনার সম্পদের হিসাব দিন'_ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি প্রধান বিরোধী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ারের এই আহ্বান নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ পল্গাজায় বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে এম কে আনোয়ার অতি সম্প্রতি এ আহ্বান জানান।


নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের মন্ত্রীদের সম্পদের হিসাব প্রদানের আহ্বান জানান। প্রধান বিরোধী দল কর্তৃক সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগ বহু পুরনো। কিন্তু সাম্প্রতিককালে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস ওমর ফারুক তালুকদারের বস্তাভরা ৭০ লাখ টাকাসহ আটকের ঘটনা দেশের সাধারণ জনগণের মনে ব্যাপক সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। যদিও বর্তমানে কোনো সরকারি দফতরে বিনা ঘুষে চাকরি হয় না এমন ধারণা দেশের অধিকাংশ লোকের। তবে ঘুষের টাকাসহ ধরা পড়ার ইতিহাস কম। বিরোধী দল কর্তৃক সম্পদের হিসাব চাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগও তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল। তাদেরও সম্পদের হিসাব চাওয়া হয়েছিল। সেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য কোন মুখে বর্তমান সরকারের প্রতি সম্পদের হিসাবদানের আহ্বান জানান সেটিও ভাবনার বিষয়। আর তার আহ্বানে সরকারি দলই-বা কেন সাড়া দেবে? প্রশ্ন হচ্ছে তিনি বা তার দল কি বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় বিরোধী দলের আহ্বানে নিজেদের সম্পদের হিসাব দিয়েছিলেন?
ইতিপূর্বে যতবারই কোনো মন্ত্রী বা সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ততবারই প্রমাণের অভাবে তা মাটিচাপা পড়েছে। এটি প্রায় কাগজ-কলম ছাড়াই প্রমাণিত যে, বিএনপি সরকার ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগ অভিযোগ করে, সরকার লুটপাট করছে। আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে বিএনপি তাদের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ তোলে। সরকারিভাবে তা প্রমাণিত না হলেও দেশের সচেতন জনগণের বুঝতে বাকি থাকে না। কারণ, ইতিপূর্বে দুর্নীতির অসংখ্য নজির দেশের জনগণ দেখতে পেয়েছে। আসলে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমরা দেশবাসী এতই কম বুদ্ধিসম্পন্ন যে ঘুরেফিরে আপনাদের দু'দলকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করি। আমাদের বোকা ভেবেই রাজনীতিবিদরা ফায়দা লুটছেন যুগের পর যুগ।
য় গোপালকৃষ্ণ সুপার মার্কেট
পিরোজপুর

No comments

Powered by Blogger.