ক্যামেরন-সু চি বৈঠক-মিয়ানমারের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ স্থগিতের আহ্বান

মিয়ানমারের ওপর আরোপ করা অর্থনৈতিক অবরোধ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন সফররত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তাঁর সঙ্গে একমত হয়েছেন দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি। গতকাল শুক্রবার দেশটির সাবেক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়।


গতকালই ক্যামেরন মিয়ানমার পৌঁছান। ১৯৬২ সালে সামরিক সরকার ক্ষমতা দখলের পর এই প্রথম কোনো পশ্চিমা দেশের সরকারপ্রধান সে দেশ সফরে গেলেন। ক্যামেরনই মিয়ানমার সফরে যাওয়া কোনো ক্ষমতাসীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
ডেভিড ক্যামেরন বলেন, ‘আমি মনে করি, অস্ত্রের বিষয়টি ছাড়া অন্য সব বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর অবরোধ স্থগিত করা সঠিক হবে। দেশটিতে পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের উচিত, এসব পরিবর্তনে সাড়া দেওয়া। তবে আমাদের অবশ্যই সতর্কতা ও সাবধানতার সঙ্গে সাড়া দিতে হবে। এসব পরিবর্তন অপরিবর্তনীয় কি না, জানার জন্য আমাদের সব সময় সন্দেহপ্রবণ ও জিজ্ঞাসু থাকতে হবে।’
মিয়ানমারের রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) প্রধান সু চি বলেন, নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করার ব্যাপারে তাঁর সমর্থন রয়েছে।
এর আগে মিয়ানমার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়নের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। গতকাল দেশটির রাজধানী নেপিডোর বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাঁকে স্বাগত জানান সরকারি কর্মকর্তারা। পরে দেশটির প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন তাঁর রাষ্ট্রীয় বাসভবনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। তিনি ক্যামেরনের এই সফরকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেন।
ক্যামেরন বলেন, ‘এখানকার সরকার বলেছে, তারা সংস্কারপ্রক্রিয়া বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছে। আমি মনে করি, এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো সঠিক।’
থেইন সেইন ক্যামেরনের উদ্দেশে বলেন, ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে মিয়ানমারে গৃহীত বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগের প্রতি আপনার ইতিবাচক মন্তব্যে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও অনুপ্রাণিত।’
মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটেন সব সময়ই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বিভিন্ন অবরোধ আরোপ করেছে। তবে সমপ্রতি এ ব্যাপারে কিছুটা নমনীয় হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে ব্রিটেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, ‘মিয়ানমারকে এখনো অনেক দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে এবং এ ব্যাপারে দেশটির জনগণকে কোনো রকম বিভ্রান্তির মধ্যে রাখা উচিত হবে না।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ইতিমধ্যে কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ২৩ এপ্রিল বৈঠক করবেন। থাইল্যান্ডে ব্রিটেনের সাবেক রাষ্ট্রদূত ডেরেক টনকিন বলেন, সংস্কারপ্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার ব্যাপারে মিয়ানমার যদি ক্যামেরনকে সন্তুষ্ট করতে পারে, তাহলে অবরোধের ব্যাপারে বড় ধরনের ছাড় দিতে পারে ইইউ। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.