সবার একই জিজ্ঞাসা-‘ইলিয়াস নিখোঁজ কেন?’

‘ইলিয়াস নিখোঁজ কেন? কী হয়েছে?’ সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে ব্যক্তি পর্যায়ে এমন জিজ্ঞাসা ছিল গতকাল বুধবার সারা দিন। কিন্তু এর জবাব মিলছিল না কোথাও। ইলিয়াসের গ্রামের বাড়ি বিশ্বনাথের রামধানায় গিয়ে দেখা যায় অন্য রকম এক শোকাবহ পরিস্থিতি।


দলমত-নির্বিশেষে সবার একই প্রশ্ন, ‘ইলিয়াস নিখোঁজ কেন?’ এই প্রশ্ন তুলে ধরে রামধানা গ্রামের জসিমউদ্দিন (৩৫) বলেন, ‘একজন সাবেক সাংসদ নিখোঁজ! এটা তো মানা যায় না।’
গতকাল দুপুরে রামধানা গ্রামে ইলিয়াসের পৈতৃক বাড়িতে গেলে ইলিয়াসের মা সূর্যবান বিবিকে ‘আমার পুয়ারে কিতা কররায় রে, আমার পুয়ারে আইনা দেও রে...!’ বলে বিলাপ করতে শোনা যায়। ইলিয়াসের বড় ভাই আওলাদ আলী জানান, গাড়িচালক আনসার তাঁদের ভাতিজা। ভাই ও ভাতিজার সন্ধান দিতে তাঁরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
গাড়িচালক আনসারের মা নূরজাহান বেগম ও স্ত্রী মুক্তা বেগম শুধু কাঁদছিলেন। আনসারের দুই বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
ইলিয়াসের নির্বাচনী এলাকা বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন জানান, ইলিয়াসকে না পাওয়ার বিষয়টি আর রাজনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। দলমত-নির্বিশেষে সবাই আতঙ্কিত ও বিস্মিত। তিনি বলেন, ‘টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণবিরোধী আন্দোলন শুরু করার পর থেকে তাঁর ওপর একের পর এক মামলা আর হয়রানি চলছিল। সাধারণ মানুষের ধারণা, বর্তমান সরকার ইলিয়াসকে গুম করেছে।’
সিলেটে ইলিয়াসের ব্যক্তিগত সহকারী ও জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মো. ময়নুল হক জানান, গত মঙ্গলবার সিলেটের আদালতে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় হাজিরা দিয়ে বিকেলে বিমানযোগে ঢাকা গিয়েছিলেন। রাতে ঢাকার বাসা থেকে গাড়িচালককে নিয়ে বের হওয়ার পর থেকে আর খোঁজ মিলছে না।
ইলিয়াস ‘নিখোঁজের’ প্রতিবাদে গতকাল সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রশিদপুরে যখন সড়ক অবরোধ চলছিল, তখন অনেক সাধারণ মানুষকেও রাস্তায় নেমে আসতে দেখা যায়। রশিদপুরের একজন স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘সাবেক একজন সাংসদ বাসা থেকে বের হয়ে নাই হয়ে গেলেন, এটা কেউ মেনে নিতে পারে না।’ দক্ষিণ সুরমার চণ্ডীপুলের বাসিন্দা সিএনজি অটোরিকশার চালক আফরোজ আলী বলেন, ‘আমরা পাবলিকেরা রাজনীতি বুঝি না। মানুষটার (ইলিয়াস) খোঁজ না পাইলে দেশে শান্তি থাকব কেমনে?’

No comments

Powered by Blogger.