অবিলম্বে ঘাতকদের গ্রেপ্তার করুন-সৌদি কর্মকর্তা হত্যা

সৌদি আরব দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলীর হত্যার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে দুঃখিত ও শোকাহত। বন্ধুপ্রতিম সৌদি আরবের একজন কর্মকর্তা সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনাটি খুবই অস্বাভাবিক। বাংলাদেশের ইতিহাসে বৈদেশিক মিশনের সদস্য খুন হওয়ার ঘটনা এই প্রথম।


এর পেছনে কারণ যা-ই থাকুক, খুনের ধরনে মনে হচ্ছে, খুনিরা খুবই দক্ষ এবং হত্যাকাণ্ডটি পূর্বপরিকল্পিত।
আমরা আশা করব, এই হত্যার তদন্ত এবং দোষী ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ততম সময়ের মধ্যে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে সরকার সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে। খুনিদের আটকে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে সরকারের আশ্বস্ত করার বিষয়টি যেন অকারণে বিশ্বাসযোগ্যতা না হারায়। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে মনে রাখতে হবে, তদন্তে কোনো ধরনের শৈথিল্য কিংবা ঔদাসীন্য আপাতদৃষ্টিতে প্রতীয়মান হলেও তা ঢাকা-রিয়াদ সম্পর্কে একেবারেই অনভিপ্রেত দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে পারে। মার্কিন সংবাদ সংস্থা এপির উদ্ধৃতি দিয়ে খালিজ টাইমস-এর প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, এই হত্যা প্রসঙ্গে তারা স্মরণ করেছে যে সম্প্রতি দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিল। সরকারকে এই হত্যার তদন্ত ও বিচার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নানা মাত্রিকতায় গুরুত্বপূর্ণ। সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশের বিপুল জনগোষ্ঠী একান্তভাবে আশা করবেন, খুনিরা যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, সৌদি নাগরিক হত্যার ঘটনা অপ্রত্যাশিত, অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। এখন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জরুরি কর্তব্য, অবিলম্বে এই হত্যার কারণ উদ্ঘাটন করা এবং হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো। এ ক্ষেত্রে কোনো দুর্বলতা, অদক্ষতা, কালক্ষেপণ ঘটলে ঢাকার কূটনৈতিক অঞ্চলের নিরাপত্তার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। গুলশান-বারিধারার কূটনৈতিক অঞ্চলের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বিভিন্ন সংস্থা সন্তুষ্টির সঙ্গেই কূটনৈতিক কোরের সদস্যদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে চলছিল। সুতরাং, একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকার কূটনৈতিক পল্লির নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি উদ্বেগজনক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হওয়া কাম্য নয়।

No comments

Powered by Blogger.