সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খুন-অপরাধীদের কঠোর দণ্ড চাই

সোমবার গভীর রাতে রাজধানীর কূটনীতিকপাড়া গুলশানে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতকারীর গুলিতে নিহত হয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলি। বাংলাদেশে কোনো বিদেশি কূটনীতিক কিংবা দূতাবাসকর্মীর খুনের ঘটনা এই প্রথম।


কঠোর নিরাপত্তা এলাকায় সংঘটিত এ ঘটনায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা যেমন রয়েছে, তেমনি তা সরকারের জন্য চরম বিব্রতকরও। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ ঘটনাকে সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত আখ্যায়িত করেছেন। এ ঘটনায় সৌদি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের কোনো অবনতি ঘটবে না বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি। সৌদি দূতাবাসের পক্ষ থেকে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুততম সময়ে যদি অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও আটক করে বিচারে সোপর্দ করতে পারে তাহলে বন্ধু দেশ সৌদি আরব বিষয়টিকে নিছক একটি অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা হিসেবেই গ্রহণ করবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দেশবাসীর অনেক অভিযোগ-ক্ষোভ রয়েছে। সাংবাদিক সাগর সরওয়ার-মেহেরুন রুনি দম্পতি নিজ বাসভবনে খুন হওয়ার পর প্রায় এক মাস অতিক্রান্ত হতে চললেও এখন পর্যন্ত কোনো কূলকিনারা পুলিশ-গোয়েন্দারা করতে পারেনি। সৌদি আরব বাংলাদেশের জনশক্তির প্রধান বাজার। সেখানে কর্মরত বাংলাদেশিরা বৈদেশিক মুদ্রাভাণ্ডার সমৃদ্ধ করায় প্রভূত অবদান রাখছেন। পবিত্র ইসলাম ধর্মের কারণেও এ দেশটির প্রতি রয়েছে বাংলাদেশের জনগণের বিশেষ আবেগ-অনুভূতি। তাদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। আমরা আশা করব, সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অপরাধীদের আটক করার জন্য তৎপরতা চালাতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র শিথিলতা-গাফিলতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনীতিকদের ওপর হামলার ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশেও এমন অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটল, যা দেশের ভাবমূর্তির জন্য দারুণ ক্ষতিকর। এ ক্ষত যত দ্রুত মুছে ফেলা যায়, ততই মঙ্গল। আমরা সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং তার পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা।

No comments

Powered by Blogger.