সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খুন-দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক

ঢাকার গুলশানে সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর পেছনে কোন্ কারণ কাজ করেছে, সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে যে কারণেই তিনি খুন হয়ে থাকুন না কেন, এই মৃত্যু আমাদের দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে নিঃসন্দেহে।


এমনিতেই আমাদের এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যমে লেখালেখি হচ্ছে। এ ঘটনার পর আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যমে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সংবাদ আরো বেশি প্রচারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে আমাদের শ্রমবাজারের যে সম্পর্ক রয়েছে, তাতেও এর কোনো প্রভাব পড়বে কি না এই মুহূর্তে তা বলা যাচ্ছে না। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে ঘটনার পর পরই বলা হয়েছে, এই ঘটনার কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের কোনো অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু বিদেশি দূতাবাসের কোনো কর্মকর্তা নিহত হওয়ার মতো বিরল ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের অবস্থান কিছুটা হলেও দুর্বল তো করতেই পারে।
এই ঘটনার পেছনে কোনো দুরভিসন্ধিমূলক ইচ্ছা কাজ করছে কি না তা যেমন আমাদের তলিয়ে দেখতে হবে, তেমনি দেখতে হবে কোনো বহিঃশত্রুর ইন্ধন রয়েছে কি না তাও। এই মুহূর্তে সরকারকে বিপাকে ফেলতে কোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের এ ক্ষেত্রে হাত ছিল কি না তা বলতে না পারা গেলেও বিভিন্ন দিকেই সন্দেহের ডানা মেলতে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খালাফ আল আলী ছিলেন সৌদি দূতাবাসের একজন নন ডিপ্লোমেটিক স্টাফ। প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি নন ডিপ্লোমেটিক হলেন বলেই কি তাঁর জীবনের নিরাপত্তা থাকবে না? একজন বিদেশি নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তা প্রদান আমাদের দেশের সরকারেরই দায়িত্ব। এই সত্যটি প্রথমেই আমাদের মেনে নিতে হবে।
এই খুনের ঘটনার পরপর সরকারের পক্ষ থেকে যেভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং যেভাবে আশ্বাস প্রদান করেছেন, তাতে অন্তত আশা করা যায় যে বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। বিষয়ের গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে- এমন প্রত্যাশা স্বাভাবিক।

No comments

Powered by Blogger.