বাংলাদেশিকে নির্যাতনের দায়ে বিএসএফের সাত সদস্যের কারাদণ্ড

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার একটি সীমান্ত চৌকিতে কয়েক মাস আগে একজন বাংলাদেশি নাগরিককে নির্যাতনের দায়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সাত সদস্যকে ৮৯ দিনের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সবাই কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন।

এ ছাড়া হেড কনস্টেবলের পদাবনতি হয়েছে। পাশাপাশি আগামী কয়েক বছর তাঁর বেতন বৃদ্ধি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শাস্তিদানের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের ইন্সপেক্টর জেনারেল রবি পোনোঠ। তিনি গতকাল বুধবার বলেন, ‘ওই ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকেরই সাজা হয়েছে। হেড কনস্টেবলের পদাবনমন হয়েছে। আর অন্যদের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কার কী শাস্তি হয়েছে, সেটা জানানো উচিত নয়। কারণ, সেটা প্রত্যেক বিএসএফ সদস্যের কর্মজীবনের গোপন নথিতে উল্লেখ থাকে।’
বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের মহাপরিদর্শক জানান, দোষী বিএসএফ সদস্যদের ওই সময়ের জন্য বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা নিয়মিত রেশন ছাড়া আর কিছুই পাবেন না।
বিএসএফ সূত্র জানায়, সামরিক আদালতের মতোই বিএসএফের আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত একটি নিজস্ব আদালতে ওই আট সদস্যের বিচার হয়।
আদালতে প্রথম সাতজনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশিকে নির্যাতনের ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। অন্যজন ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
বিএসএফ সূত্র জানায়, বেশ কয়েক দিন আগেই তাঁদের বিচারের প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন তাঁরা সাজা ভোগ করছেন। কিন্তু শাস্তি লাভের বিষয়টি ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়নি।
বিএসএফের মুখপাত্র বিকাশ চন্দ্র বার্তা সংস্থাকে বলেন, এটি খুব বড় সাজা। তবে তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয় ভারতের মানবাধিকার সংগঠনগুলো। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই শাস্তি যথেষ্ট নয়। ভারতের সামরিক আদালত ন্যায়বিচার প্রয়োগে ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়ায় আবারও নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হবে।ভারতের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর জোট এমএএসইউএমের সম্পাদক কিরিতি রায় বলেন, ‘যে ব্যবস্থা তাঁরা প্রতিপালন করছেন, তা শাস্তি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিধানকেই প্রাতিষ্ঠা করবে।’
গত বছরের ডিসেম্বরে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার চর মৌরিসি সীমান্ত চৌকিতে বিএসএফের সদস্যরা গরু পাচারকারী সন্দেহে বাংলাদেশের নাগরিক হাবিবুর রহমানকে নগ্ন করে তাঁর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালান।
পুরো ঘটনাটি মুঠোফোনের ক্যামেরায় রেকর্ড করে রাখা হয়। পরে ১১ মিনিটের এই ভিডিওটি গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিবিসি ও এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.