স্বীকৃতির ৪০ বছর উদ্যাপন-গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সুশাসনের আদর্শ হতে পারে নর্ডিক দেশগুলো’

গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সুশাসন কিংবা নারীর ক্ষমতায়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে গত ৪০ বছরে বাংলাদেশের অর্জন থাকলেও সেটি এখনো কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌঁছায়নি। এ ক্ষেত্রে সুইডেন, নরওয়ে ও ডেনমার্কের মতো দেশগুলো বাংলাদেশের উদাহরণ হতে পারে।


রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার ৪০ বছর উদ্যাপন উপলক্ষে গতকাল শনিবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন। তিন নর্ডিক দেশ সুইডেন, নরওয়ে ও ডেনমার্ক ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই স্বীকৃতির চার দশক উদ্যাপন উপলক্ষে দেশ তিনটির ঢাকার দূতাবাস যৌথভাবে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী আলোচনা সভার আয়োজন করে। তিন দেশের রাষ্ট্রদূত, রাজনীতিক, সাংবাদিকসহ বিশিষ্টজনেরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘গণতন্ত্র, শান্তি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নারীর ক্ষমতায়ন কিংবা সমঅধিকারের মতো বিষয়গুলোর কথা এলেই আমাদের নর্ডিক দেশগুলোর কথা মনে আসে। দেশ পুনর্গঠনের সময় তাদের স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য বড় পাওয়া ছিল। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৪০ বছর ধরে এই তিনটি দেশ বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে আসছে।’ স্বাধীনতার স্বীকৃতির ৪০ বছর উদ্যাপন অনুষ্ঠান হওয়ার বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গৌরবের বলে মন্তব্য করেন বিশেষ অতিথি উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য নর্ডিক দেশগুলোতে গিয়ে গবেষণা করছেন। এই দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্কও ভালো।’ সুইডিশ রাষ্ট্রদূত এনেলি লিন্ডা কেনি বলেন, ‘১৯৭২ সালে আমরা সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিলাম। গত ৪০ বছরে সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। বাংলাদেশ আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এ দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ তার তরুণ সমাজ।’
উদ্বোধনী অধিবেশনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত সেন্ড ওলিং, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত রেগনি বিরতে লুন্ড ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আলী যাকের।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সুশাসন, মানবাধিকার এসব ব্যাপারে গত ৪০ বছরে বাংলাদেশের অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে এ নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগা যাবে না। কারণ কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। কাজেই অবস্থার আরও উন্নতি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নর্ডিক দেশগুলো আদর্শ হতে পারে।’
ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম অনেক স্বাধীন। কিন্তু সেই গণমাধ্যম যেভাবে কাজে লাগার কথা তা হচ্ছে না। কারণ সরকার সব সময় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলো উপেক্ষা করে।’
এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে সিনেট ভবনকে সাজানো হয় বর্ণিল সাজে।

No comments

Powered by Blogger.