শেখ হাসিনার অনুরোধ-ড. ইউনূসকে বিশ্বব্যাংকের প্রধান করুন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিশ্বব্যাংকের প্রধান হিসেবে মনোনীত করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) অনুরোধ করেছেন। গতকাল বুধবার ইইউ পার্লামেন্টের সদস্য জেন ল্যামবার্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে দেখা করতে গেলে তিনি এ প্রস্তাব দেন।


বৈঠক সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানের জন্য ড. ইউনূস সারা বিশ্বে একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর এই অভিজ্ঞতা বিভিন্ন দেশে বিশ্বব্যাংকের কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে কাজে আসবে। তিনি বলেন, ইইউ ড. ইউনূসকে বিশ্বব্যাংকের প্রধান নির্বাচিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রভাবিত করতে পারে। নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদের গ্রামীণ ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানসহ বিশ্বজুড়ে স্বনামধন্য অনেক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, আগামী এপ্রিলের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোয়েলিক আগামী জুনের শেষদিকে পদত্যাগ করবেন।
বাসস সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার দেশে সুশাসন ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জাতীয় সংসদকে সব রাজনৈতিক আলোচনা ও সিদ্ধান্তের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে আন্তরিক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইনে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কমিশন সফলভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) চালু করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ইইউ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। ইউরোপের দেশগুলোতে ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৪৪০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তিনি জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বেশি করে সহায়তা দিতে ইইউভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা ইইউর দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার জন্য ক্লিন ডেভেলপমেন্ট ম্যাকানিজম (সিডিএম) সম্পর্কিত প্রকল্প তৈরি এবং সবুজ প্রযুক্তি চালু করতে প্রযুক্তিগত সহায়তারও আহ্বান জানান।
জেন ল্যামবার্ট সন্ত্রাস দমন, গণতন্ত্র শক্তিশালী করা এবং সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী সম্প্রসারণের মাধ্যমে জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের ভূমিকারও ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোল্লা ওয়াহেদুজ্জামান ও প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.