খুলনা ওয়াসা কি জেগে ঘুমায়? পাঁচ দিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ

পানি ছাড়া মানুষের জীবন অচল—এ কথা সম্ভবত খুলনা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের জানা নেই। জানা থাকলে নগরের ঘনবসতিপূর্ণ মুজগুন্নি এলাকায় পাঁচ দিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকার পরও তারা এমন নির্বিকার থাকতে পারত না। এলাকার দুটি মোটরের একটি বিকল হওয়ায় পানি ওঠানো যাচ্ছে না বলেই দায়িত্ব শেষ করেছেন ওয়াসার কর্মকর্তারা। সেখানকার বাসিন্দা, যারা ট্যাঁকের পয়সা দিয়ে পানি কেনে, তাদের বঞ্চিত রাখার অধিকার ওয়াসার নেই। মোটর খারাপ হলে তা মেরামত করার দায়িত্ব ওয়াসা কর্তৃপক্ষের। ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে পানি সরবরাহ বন্ধ আছে। এই মোটর কত দিনে সারানো যাবে, সে ব্যাপারেও ওয়াসার কর্মকর্তারা কিছু বলতে পারছেন না।
এর মাধ্যমে খুলনা ওয়াসা কেবল দায়িত্বহীনতারই পরাকাষ্ঠা দেখায়নি, তারা এলাকাবাসীর পানি পাওয়ার মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত করেছে। কোনো কারণে এলাকায় পানির মোটর বন্ধ থাকলে ওয়াসার দায়িত্ব দ্রুত সেই মোটর সারানো এবং অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এলাকাবাসীর কাছে পানি পৌঁছানো। প্রয়োজনে তারা সে জন্য বাড়তি অর্থ নিতে পারে। কিন্তু এভাবে দিনের পর দিন পানি থেকে মানুষকে বঞ্চিত করতে পারে না।
গ্রামগঞ্জে নাহয় খাল-পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করা যায়। শহরবাসীর সেই সুযোগ নেই। ওয়াসাই ভরসা। কিন্তু খুলনা ওয়াসা যদি এভাবে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেয়, মানুষ কোথায় যাবে? সব এলাকায় টিউবওয়েলও নেই যে বিকল্প পথে তারা পানি সংগ্রহ করতে পারবে। বিদ্যুৎ ছাড়াও হয়তো মানুষ চলতে পারে। প্রয়োজনে মোমবাতি ও হারিকেন বিদ্যুতের বিকল্প হতে পারে। কিন্তু পানির বিকল্প নেই। অন্তত জীবনধারণ ও গৃহস্থালির জন্য কিছু পানি তো তার চাই।
অতএব, অবিলম্বে খুলনার মুজগুন্নি এলাকায় পানি সরবরাহ করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে কেন মোটর নষ্ট হলো, কাদের কারণে নষ্ট হলো, তা-ও খতিয়ে দেখা হোক। সরকারি সম্পদ এভাবে নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। অনেকেই ভাবেন, মোটর নষ্ট হওয়া মানেই নতুন মোটর কেনা এবং কমিশন পাওয়া। কেবল খুলনা ওয়াসা নয়, সেবা খাতের সব প্রতিষ্ঠানকে এ ব্যাপারে সজাগ থাকার আহ্বান জানাই।

No comments

Powered by Blogger.