ক্রিকেট নিয়ে জুয়া খেলেছিলেন ইমরান

ক্রিকেট নিয়ে ইমরান খান জুয়া খেলেছিলেন। এমন তথ্য জানিয়েছেন পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক নিজেই। ইমরান নাকি সেই জুয়ায় জেতা অর্থ ব্যয় করেছিলেন নিজের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফের নির্বাচনী ঋণ মেটাতে। সম্প্রতি প্রকাশিত ইমরান খানের লেখা ‘পাকিস্তান: এ পারসোনাল হিস্টরি’ বইয়ে ইমরান বলেছেন ২০০২ সালে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তাঁর দল দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিল।

সে সময় তিনি তাঁর শ্যালক বেন গোল্ডস্মিথের সঙ্গে ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার একটি টেস্ট ম্যাচ নিয়ে জুয়া খেলেছিলেন। সেই জুয়া থেকে তাঁর জেতা ১০ হাজার পাউন্ড ইমরান ব্যয় করেছিলেন নির্বাচনী ঋণ পরিশোধে। ইমরান লিখেছেন, ২০০২ সালে তিনি তাঁর সাবেক স্ত্রী জেমাইমা গোল্ডস্মিথের সঙ্গে ইংল্যান্ড অবস্থান করছিলেন। সে সময় তাঁর বিলিয়নীয়র শ্যালক বেল গোল্ডস্মিথ তাঁকে বারবার ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট ম্যাচের বিভিন্ন সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করছিলেন। ইমরান জানতেন বেন ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে জুয়া খেলেন। ইমরান তখন সিদ্ধান্ত নেন, তিনি তাঁর দলের ঋণ এই উপায়েই মিটিয়ে ফেলবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইমরান বেনের সঙ্গে বসে টেস্ট ম্যাচের দুটি দিন দেখেন। সে সময় ম্যাচের বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করে তিনি প্রায় ১০ হাজার পাউন্ড জিতে নেন।
ইমরান অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি ক্রিকেট নিয়ে জুয়া খেলেছেন বটে, কিন্তু ম্যাচটির জয়-পরাজয়ের সঙ্গে সেই জুয়ার কোনো সম্পর্ক ছিল না।
ইমরান খান আরও বলেছেন, পুরো ক্যারিয়ারে তিনি কোনো দিনই ক্রিকেট-জুয়ার ব্যাপারে আকর্ষণ অনুভব করেননি। ২০০২ সালে তিনি তাঁর শ্যালকের সঙ্গে যে জুয়ায় অংশ নেন, তার উদ্দেশ্য ছিল একটিই—নিজের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফের নির্বাচনী ঋণ পরিশোধ।
সত্তর ও আশির দশকের ক্রিকেট ও ব্যক্তিগত অনেক ব্যাপারই উঠে এসেছে ইমরান খানের এই বইয়ে।
ইমরান খান ওই সময়ে মেয়েদের কাছে স্বপ্নের পুরুষ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। পুরো ক্যারিয়ারে ইমরানের বিয়ে করা, না করা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের পত্রিকাগুলো প্রায়ই মুখরোচক সংবাদে ভরে উঠত।
এ ব্যাপারে ইমরান খান লিখেছেন, ‘আমার বিয়ে নিয়ে গণমাধ্যমের জল্পনা-কল্পনা দেখে একসময় বাবা খেপে ওঠেন। তিনি আমার বিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিজ হাতে তুলে নেন। তিনি একদিন আমাকে নিয়ে তাঁর বন্ধুবর এক ব্যক্তির মেয়েকে দেখতে তাঁর বাড়িতে যান।’
সেই ঘটনাটিকে দারুণ মজার উল্লেখ করে ইমরান খান বলেন, ‘বাবার বন্ধুর মেয়েকে দেখতে গিয়ে আমি প্রচণ্ড বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ি। আমার সামনে মেয়েটিকে নিয়ে আসা হয়। আমি খুবই লজ্জা পেয়ে যাই। এতটাই লজ্জা পাই যে তার দিকেই তাকিয়ে দেখিনি। ওই বাড়ির লোকজন আমাকে নিয়ে যথেষ্ট বাড়াবাড়ি করে। তারা এমনভাবে আমার সঙ্গে কথা বলতে থাকে, যেন আমি সদ্যই কৈশোর পেরোনো একটি ছেলে। অথচ তখন আমার বয়স ৩০ পর হয়ে গেছে। আমি আর বাবা কোনোমতে সেই “আদর-আপ্যায়ন” থেকে রেহাই নিয়ে পালিয়ে আসি। আসার পর বাবা আমাকে মেয়ে পছন্দ হয়েছে কি না জিজ্ঞেস করলে আমি তাঁর মনোভাব বুঝে সাহস করে আমার অপারগতার কথা জানাই। বাবা হেসে চুপ করে যান। আর কখনোই বিয়ে নিয়ে তিনি আমাকে আর কিছু বলেননি।’ টাইমস নিউজ নেটওয়ার্ক।

No comments

Powered by Blogger.