বেতন না পেয়ে নেপালি কর্মীরা বেছে নিচ্ছেন পতিতাবৃত্তি

নেপালে এইডস সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রমে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। মূলত আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বেতন-ভাতা না পেয়ে এইডস বিষয়ে শিক্ষাদান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নারী কর্মীদের অনেকেই বাধ্য হয়ে পতিতাবৃত্তির আশ্রয় নিচ্ছেন। দেশটিতে এইডস বিষয়ে প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে এমন সংস্থা গতকাল শুক্রবার এ অভিযোগ করেছে।সমকামীদের অধিকার ও এইডস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে নিয়োজিত ব্লু ডায়মন্ড সোসাইটি জানিয়েছে, তারা ১২ সপ্তাহ ধরে তাদের কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতে পারছে না। এসব নারীকে মাসে তিন হাজার রুপি করে দেওয়া হতো।

ব্লু ডায়মন্ড সোসাইটির নেতা ও এমপি সুনীল বাবু বলেন, 'নেপালে প্রায় ৪০০ কর্মী এইডস বিষয়ে লোকজনকে শিক্ষা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত। তাঁদের মধ্যে অনেকেই এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত।' সুনীল আরো বলেন, 'এসব কর্মীর প্রধান কাজ হচ্ছে লোকজনকে নিরাপদ যৌনজীবন সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া, কনডম সরবরাহ এবং এইচআইভি ও যৌনজীবন সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া। আমাদের কাছে বিস্তারিত তথ্য না থাকলেও জানা গেছে, এসব কর্মীর অনেকেই জীবনধারণের জন্য বাধ্য হয়ে পতিতাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।'
সুনীল জানান, সীমান্ত এলাকাগুলোতে তাঁদের অনেক কর্মীই কনডম ব্যবহার করছেন না। কারণ এসব এলাকায় বিনা মূল্যে গর্ভনিরোধক সরঞ্জাম পাওয়া যায় না।
বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান দ্য ওয়ার্ল্ড পলিসি ইনস্টিটিউট চলতি সপ্তাহে তাদের ব্লগে জানায়, নেপালে এইচআইভি/এইডস নিয়ে কাজ করে, এমন বেসরকারি সংস্থাগুলোর জন্য (এনজিও) বরাদ্দ এক কোটি ডলার বর্তমানে সরকারের হাতে আটক রয়েছে। নেপালে এইডসে আক্রান্তের হার কমে আসায় ২০০৯ সালে সরকার ঘোষণা করে, তারা এইচআইভি/এইডস বিষয়ে শিক্ষণ কর্মসূচিতে আর অর্থ জোগান দেবে না। এর পর থেকেই ওই অর্থ সরকারের হাতে আটকে রয়েছে। তবে বিশ্বব্যাংকের চাপের মুখে সরকার পরে তাদের সিদ্ধান্ত পাল্টাতে রাজি হয়। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এখনো ওই অর্থ ছাড় হয়নি।
এইচআইভি/এইডস বিষয়ে জাতিসংঘের যৌথ কর্মসূচির প্রতিবেদন অনুযায়ী নেপালের প্রাপ্তবয়স্ক লোকজনের শতকরা প্রায় এক ভাগ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত। সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.