জামিলের বিদায় চান না খেলোয়াড়েরা

ক্লাব কাপ হকির ফাইনালে ঘটে যাওয়া নাটকের পর সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার জামিলউদ্দিনের পদত্যাগের ঘটনায় বেশ সংকটেই পড়েছে হকি ফেডারেশন। তবে জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরা জামিলউদ্দিনের এমন বিদায় মেনে নিতে পারছেন না। তাঁদের আশা, জামিলউদ্দিন পদত্যাগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করবেন।
এশিয়ান গেমসের বাছাইপর্বের খোঁজখবর নিতে হকি স্টেডিয়ামে আসেন জাতীয় দলের গোলরক্ষক মেহরাব হোসেন (কিরণ)। একটু পর আসেন মোশাররফ হোসেন (কুটি)। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার জামিলউদ্দিনের পদত্যাগের খবরে তাঁরা দুজনই মর্মাহত। শুধু তাঁরা নন, জাতীয় দলের বেশির ভাগই খেলোয়াড়ই মেনে নিতে পারছেন না এটি।
জাতীয় দলের ডিফেন্ডার আসাদুজ্জামান (চন্দন) জানান, ‘খবরটা শুনে আমরা মর্মাহত। উনি আমাদের জন্য অনেক করেছেন। তাঁর জন্যই মূলত জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে খেলতে পেরেছি আমরা।’ স্ট্রাইকার রাসেল মাহমুদও (জিমি) কষ্ট পেয়েছেন এ খবরে, ‘খবরটা শুনে আমার খারাপ লেগেছে।’ জামিলউদ্দিন পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করবেন বলে আশাবাদী আসাদুজ্জামান ও রাসেল মাহমুদ। আসাদুজ্জামান তো ক্যাম্প বর্জনেরও হুমকি দিয়ে দিয়েছেন, ‘উনি যদি নির্বাহী কমিটির সভায় পদত্যাগপত্র না ফিরিয়ে নেন তাহলে আমি আর জিমি এই এশিয়ান গেমসের বাছাইপর্বের ক্যাম্পও বর্জন করতে পারি।’ কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন বলে আবদুস সাজ্জাদ (জন) মাঠেই আসতে পারেননি। কাল ফোনে জানালেন, ‘জামিল ভাইয়ের পদত্যাগের খবরটা পত্রিকায় পড়ে খুবই খারাপ লেগেছে। উনি আমাদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। আমরা ওনার মতো সংগঠককে হারাতে চাই না।’ মোশাররফের কথা, ‘শুধু জামিল ভাই নন, ওনার মতো আরও কিছু সংগঠক হকিতে প্রয়োজন। উনি এ মুহূর্তে চলে গেলে হকির কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। হকির স্বার্থেই ওনার থাকা উচিত।’
যাঁকে নিয়ে এত আলোচনা সেই জামিল নিজেই অবশ্য পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের কথা ভাবছেন, ‘সব ব্যর্থতা স্বীকার করেই পদত্যাগ করেছি। তবে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ওরা সবাই চাইছে, আমি ফিরে আসি। আমার পরিবারের জন্য পুরো ঘটনাটা বিব্রতকর ছিল। তাই যা করব পরিবারের সবার সঙ্গে কথা বলে ভেবেচিন্তেই করব।’ ২৪ এপ্রিল নির্বাহী কমিটির সভা। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হবে তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত হবে, নাকি তাঁকে আবারও দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ করা হবে।
জামিলউদ্দিনের পদত্যাগে ফেডারেশনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। ক্লাব কাপ টুর্নামেন্ট শুরুর আগে জাতীয় দল থেকে অবসরে যাওয়া ছয়জন খেলোয়াড় মোশাররফ হোসেন, মশিউর রহমান, আবদুস সাজ্জাদ, খন্দকার হাসান, রিমন কুমার ও জাহিদ বিন তালিব (শুভ) পড়েছেন বিপাকে। মোশাররফ জানান, ‘এখন ফেডারেশনে যে হ-য-ব-র-ল অবস্থা তাতে আমাদের যে কী হবে, সেটাই বুঝতে পারছি না। আসন্ন এশিয়ান গেমসের বাছাইপর্বে আমরা খেলতে চাই। কিন্তু চাইলেই তো হবে না। সবকিছুর একটা প্রক্রিয়া আছে। সেই সুযোগ কই?’
এদিকে গত কয়েক দিনের ঘটে যাওয়া ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আবাহনী কেন্দ্রীয় সমর্থক গোষ্ঠী হকি ফেডারেশনের সব কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবি করেছে।

No comments

Powered by Blogger.