ভূমিকম্পে নিহত ৭০০ মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে

চীনে ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহর জেইগুতে গতকাল শনিবার প্রায় ৭০০ মৃতদেহ একসঙ্গে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এদিকে বুধবারের ওই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা সরকারি হিসাব অনুযায়ী এক হাজার ১৪৪-এ পৌঁছেছে। এ ছাড়া নিখোঁজ আছে আরও ৪১৭ জন। এদিকে ভূমিকম্পবিধ্বস্ত এলাকা সফরে যেতে দেওয়ার জন্য চীন সরকারের প্রতি গতকাল আহ্বান জানিয়েছেন তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামা।
তিব্বতে মানুষ মারা গেলে ফালি ফালি করে শকুনকে খেতে দেওয়া হয়। এটাই সেখানকার ঐতিহ্যবাহী অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া-পদ্ধতি। কিন্তু ভূমিকম্পে নিহত এত মানুষকে এভাবে সৎকার করতে গেলে রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় পুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় এক অধিবাসী বলেন, এত মৃতদেহ শকুনে খেয়ে পারবে না। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রায় ৭০০ মৃতদেহ গতকাল একসঙ্গে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এ জন্য প্রথমে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মন্ত্র পাঠ করেন, এরপর মৃতদেহগুলো একটি গর্তে রেখে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। উদ্ধার তৎপরতা এখনো অব্যাহত আছে। কিন্তু ভূমিকম্পের পর চার দিন পেরিয়ে যাওয়ায় এখন আর কারও ধ্বংসস্তূপের নিচে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। উদ্ধারকাজের জন্য ভারী সরঞ্জাম গত শুক্রবার সেখানে পৌঁছেছে সড়কপথে কয়েক শ কিলোমিটার দূর থেকে। এ ছাড়া খাবার, ওষুধ, তাঁবুও পৌঁছাতে শুরু করেছে। তবে উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, প্রয়োজন আরও বেশি।
চীনের চিংহাই প্রদেশে গত বুধবারের ভূমিকম্পের পর থেকে হাজার হাজার মানুষ এখনো গৃহহীন। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায় খোলা জায়গায় রাত-দিন কাটছে তাদের। চীন কর্তৃপক্ষ সেখানে ১০ হাজার সেনা ও চিকিৎসক পাঠিয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এত ব্যাপক যে পরিস্থিতি সামাল দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বেইজিং কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে সরকার সম্ভাব্য সবকিছু করবে।
এদিকে গতকাল এক বিবৃতিতে স্বেচ্ছানির্বাচিত তিব্বতি নেতা দালাই লামা বলেন, ‘তিব্বতিদের ইচ্ছা পূরণে আমি সেখানে যেতে চাই। আমি সেখানে গেলে তারা শান্তি পাবে।’

No comments

Powered by Blogger.