সবকিছুর বিনিময়ে পরমাণু অস্ত্র পেতে চান ওসামা বিন লাদেন

আল-কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেনের একজন সাবেক দেহরক্ষী সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বইয়ে দাবি করেছেন, বিন লাদেন তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তির বিনিময়ে হলেও পারমাণবিক অস্ত্র হস্তগত করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন। এ ছাড়া ধরা পড়ার নিশ্চিত আশঙ্কা দেখা দিলে বিন লাদেনকে তাঁর ওই দেহরক্ষী যেন গুলি করে হত্যা করেন, সে জন্য তিনি তাঁকে আগাম নির্দেশ দিয়েছিলেন। নাসের আল বাহির নামের ওই দেহরক্ষী ও জর্জেস ম্যালব্রাউন্ট নামের এক ফরাসি সাংবাদিক যৌথভাবে ইন দ্য শ্যাডো অব বিন লাদেন: রেভল্যুশনস অব এ রিপেনট্যান্ট বডিগার্ড শিরোনামের ওই বইটি লিখেছেন। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ৪৭ জাতির পরমাণু সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আল-কায়েদা পরমাণু অস্ত্র হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে ঘোষণা দেওয়ার পরের দিন ফ্রান্সে বইটি প্রকাশিত হয়। খবর এএফপির।
ওই বইয়ে নাসের আল বাহির বলেছেন, ১৯৯৮ সালের আগস্টে আফ্রিকায় দুটি মার্কিন দূতাবাসে আল-কায়েদা হামলা চালানোর পর বিন লাদেন মার্কিন তৎপরতার কারণে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। সে সময় নাসের তাঁর ছায়াসঙ্গী ছিলেন। নাসের বলেছেন, আমেরিকানদের সঙ্গে শক্তির ভারসাম্য অর্জন করতে লাদেন পরমাণু অস্ত্র হাতে পেতে চান। এর বিনিময়ে তিনি তাঁর সব সম্পদ খরচ করতেও কুণ্ঠিত হবেন না বলে জানিয়েছিলেন। নাসেরের বক্তব্য অনুযায়ী, লাদেন পরমাণু অস্ত্র পেলেই তা ব্যবহার করবেন—এ নীতিতে তিনি বিশ্বাসী নন। বরং যুক্তরাষ্ট্রকে চাপে রাখতে তিনি এ অস্ত্রকে সংরক্ষণ করার পক্ষে ছিলেন। তবে লাদেনের ডান হাত বলে পরিচিত আইমান আল জাওয়াহিরি প্রতিরোধমূলক নয়, বরং আক্রমণাত্মক অস্ত্র হিসেবেই এ অস্ত্র ব্যবহারে মত দিয়েছিলেন।
নাসের লিখেছেন, বিন লাদেন একটি পিস্তলে দুটি গুলি ভরে সেটি তাঁর হাতে দিয়ে বলেছিলেন, তিনি কোনো অবস্থাতেই আমেরিকানদের হাতে ধরা পড়তে চান না। তিনি নাসেরকে আগাম নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, নিশ্চিতভাবে ধরা পড়তে যাচ্ছেন মনে হলে নাসের যেন তাঁকে ধরা পড়ার আগেই গুলি করে হত্যা করেন।
নাসের বলেন, তাঁর বিশ্বাস, লাদেন এখনো বেঁচে আছেন এবং পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্ত এলাকায় তিনি আত্মগোপন করে আছেন। ইয়েমেনের বংশোদ্ভূত সাবেক ফরাসি নাগরিক নাসের ২০০১ সালে মার্কিন গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়েন এবং টানা চার বছর তিনি কারাবন্দী ছিলেন। বর্তমানে তিনি মুক্ত এবং নিজেকে লাদেনের মতবাদের ঘোরবিরোধী বলে দাবি করেন।

No comments

Powered by Blogger.