অভিবাসী ইস্যুতে আজ ব্যাংককে সম্মেলন

সাগরে ভাসমান বাংলাদেশী ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ইস্যুতে আজ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক এক সম্মেলন। এ সম্মেলনে ওই অঞ্চলে অভিবাসী সংকট নিয়ে ১০ দফা প্রস্তাব দেবে আন্তর্জাতিক তিনটি সংস্থা। এ কথা বলেছে শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের হাইকমিশন। এসব সংস্থার মধ্যে রয়েছে আইএনএইচসিআর, ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) ও জাতিসংঘের ড্রাগ অ্যান্ড ক্রাইম। তারা এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর সঙ্গে তাদের ১০ দফা শেয়ার করেছে। এ ক্ষেত্রে তারা ওই অঞ্চলে ভাসমান নৌযানে যেসব মানুষের জীবন বিপন্ন তাদের সহায়তার জন্য সুদৃঢ় পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। ইউএনএইচসিআর আশা করছে, আজকের সম্মেলনে যোগ দেয়া দেশগুলো মানবিক সংকট মোকাবিলায় যৌথ কর্মপন্থা নিয়ে একমত হবে। তারা এ সমস্যার মূল চিহ্নিত করতে পারবেন বলে আশা করা হয়। এ মাসের শুরুর দিকে থাইল্যান্ডের গহিন জঙ্গলে অভিবাসীদের গণকবর আবিষ্কার হওয়ার পর এ ইস্যুতে বিশ্বজুড়ে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। সাগরে আটকা পড়া বিপন্ন মানুষের কান্না পৌঁছে গেছে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে। তাই বিশ্ব সম্প্রদায় তাদের বাঁচানোর কর্মপন্থা নির্ধারণে আজ এ বৈঠকে বসেছে। থাইল্যান্ড এই সম্মেলন আহ্বান করেছে। এতে যোগ দেবেন ১৭টি দেশের সরকারি পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ, ইউএনএইচসিআর, আইওএম ও জাতিসংঘের ড্রাগ অ্যান্ড ক্রাইম। ওদিকে, মালয়েশিয়াতে যে ১৩৯টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে সেখানে পাচার করে নেয়া মানুষকে সমাহিত করা হয়েছে। মারা যাওয়া এসব অভিবাসীকে মুসলিমরীতি অনুযায়ী সাদা কাফনে সমাহিত করা হয়েছে। সীমান্তবর্তী ওয়াং কেলিয়াং শহরে উপ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ান জুনাইদি তুয়ানকু জাফর বলেছেন, কবরগুলোর সাইজ দেখে আমাদের পরিষ্কার ধারণা জন্মেছে যে, এসব গণকবরের একটি কবরে একজন করে ব্যক্তির লাশ দাফন করা হয়েছে। তবে ওই গণকবরে কি ১৩৯টি লাশই দাফন করা হয়েছে? বার্তা সংস্থা এএফপির এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়ান জুনাইদি বলেছেন, হ্যাঁ। তিনি বলেন, অভিবাসী নিয়ে এই সমস্যা শুধু মালয়েশিয়ার জন্য নয়। এটা একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। কারণ, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে আসছে এসব মানুষ। তাই এ সমস্যা এখন আসিয়ানের।
নিউজিল্যান্ড আশ্রয় দেবে: ওদিকে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জন কি বলেছেন, পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় তার দেশ কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাকে নিতে পারে। জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের পরিকল্পনার  অধীনে প্রতি বছর তার দেশে ৭৫০ জন শরণার্থীকে নেয়ার কোটা আছে। তিনি বলেন, এ কর্মসূচির আওতায় আমরা কিছু শরণার্থীকে নিতে পারি।
মিয়ানমারই পারে সমস্যার সমাধান করতে: রোহিঙ্গা ইস্যুতে যে সমস্যার সৃষ্টি তা সমাধান করতে পারে মিয়ানমারই। সেলাঙ্গারে অবস্থিত নলেজ গার্ডেন লার্নিংয়ের প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোহাম্মদ বলেন, আমরা যদি মিয়ানমারের সমস্যা সমাধান করতে পারি তাহলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আমরা মানব পাচার বন্ধ করতে পারবো।
মিয়ানমারে বিক্ষোভ: মিয়ানমারের কয়েক শত নাগরিক রোহিঙ্গা বিরোধী বিক্ষোভ করেছে। এতে অংশ নেন বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নাগরিক। তারা এ সময় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। বলেন, আমাদের দেশের অবমাননা করবেন না। মিয়ানমারে কোন রোহিঙ্গা নেই। এটা জাতিসংঘের সৃষ্টি।

No comments

Powered by Blogger.