মর্যাদাশীল বাংলাদেশের রাজনীতি রক্তে রঞ্জিত

খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা আওয়ামী লীগ নেতার মামলা
খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা আওয়ামী লীগ নেতার মামলা
বাংলাদেশ একটি মর্যাদাশীল দেশ। সাম্প্রতিক সময়ে এখানকার উত্তেজনাপূর্ণ রাজনৈতিক দৃশ্যপট রক্তে রঞ্জিত হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, এই রক্তপাত হয়েছে বাংলাদেশের একে-অন্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। এ উত্তেজনা উসকে দিয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকারী দুই নেতার ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ। তারা হলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা। অন্যজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দল বিএনপির প্রধান খালেদা জিয়া। যে কোন ইস্যুতে তারা দুজন একে অন্যের বিরোধী। দেশের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতায় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে তাদের এই কট্টর অবস্থান। তা ছাড়া বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাপূর্ণ দেশ। এ দেশের বেশির ভাগ মানুষ তরুণ ও যুবক। অন্য দেশের ক্ষেত্রেও হয়তো তা প্রযোজ্য। কিন্তু বাংলাদেশী এসব তরুণ বা যুবক অলস নন। দেশের এসব কঠোর পরিশ্রমী মানুষের কারণে বিশ্বের হাতেগোনা দু-একটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ প্রায় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। অনলাইন সৌদি গেজেটে এসব কথা লিখেছেন তারিক এ আল মঈনা। এতে তিনি আরও লিখেছেন, কয়েক মাস আগে সৌদি আরবের বাসাবাড়ির মানুষগুলো একটি খবরে খুবই উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন। খবরটি হলো, বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মী আমদানির ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে গৃহকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়া ছিল সৌদি আরবের পছন্দের। কিন্তু তারাই এখন ঢাকার রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে গৃহকর্মী নিয়োগের অনুরোধ পাঠাচ্ছেন। বাংলাদেশী গৃহকর্মী নিয়োগের জন্য দরজা যখন সৌদি আরব খুলে দিয়েছে, তখন এ সংখ্যা হাজার হাজার হবে। একপর্যায়ে তা ২০ লাখে পৌঁছাবে বলে এরই মধ্যে হিসাব ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, সৌদি আরবে কিছু অতিথি শ্রমিকের অবৈধ কর্মকাণ্ডের খবর সৌদি আরবের মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ার পর তা নিয়ে ব্যাপক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তার ধারাবাহিকতায় আসে বাংলাদেশী গৃহকর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা। এ বিষয়টি ব্যাপক প্রচারও করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ সম্পর্কে তারিক এ আল মঈনা ওই নিবন্ধে বাংলাদেশের ইতিবাচক অনেকগুলো দিক তুলে ধরেন। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশে রয়েছে পরিশ্রমী মানুষ। এটা হয়েছে হয়তো চিন্তাশীল শিক্ষাব্যবস্থার কারণে। বাংলাদেশে যে বহুজাতিক পোশাক প্রতিষ্ঠানগুলো আছে তা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এসব জনশক্তি রয়েছে নেপথ্যে। গত কয়েক বছরে গার্মেন্ট রপ্তানি অব্যাহতভাবে বেড়ে চলেছে। আসছে বিদেশী বিনিয়োগকারী। এখানে শ্রমশক্তি সস্তা। এতে আকৃষ্ট হচ্ছে তারা। কঠোর পরিশ্রম, উৎপাদনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি বজায় থাকবে, বাংলাদেশ সফলতার দিকে এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। এর মধ্যে শতকরা ৬০ ভাগেরও বেশি মানুষের বয়স ২৫ বছরের নিচে। এখানে রয়েছে সুশিক্ষার ব্যবস্থা। খাপ খাওয়ানোর মতো পরিশ্রমী জনশক্তি, যাদের বেতন সর্বনিম্ন। বাংলাদেশে নতুন প্রজন্মকে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠার জন্য অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে। বাংলাদেশকে সস্তা শ্রমের উৎস হিসেবে দ্বিতীয় পর্যায়ের একটি সুযোগ হিসেবে দেখা উচিত। এটা শুধু ড্রাইভার ও গৃহকর্মীর দেশ নয়। এ দেশ সৌদি বিনিয়োগকারীদের জন্য লাভজনক শিল্প ও ব্যবসায় বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.