ধর্ষণের জরিমানা ভাগ করে নিলেন সরকারদলীয় নেতারা

গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রথম শ্রেণীর এক শিশুকে ধর্ষণের পরেও থানায় মামলা হয়নি। গ্রাম্য মাতব্বররা অভিযুক্ত ধর্ষককে আর্থিক জরিমানা করে রেহাই দিয়েছেন। আর জরিমানার অর্থ সরকারদলীয় নেতাসহ গ্রাম্য মাতব্বররা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুরে উপজেলার লস্করহাটি গ্রামের হযরত আলীর ছেলে হানিফ (২০) একই এলাকার ৭ বছরের এক শিশুকে নিজ বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে শিশুটি ধর্ষণের কথা তার পরিবারের সদস্যদের অবহিত করে। এ ঘটনার পর ওই শিশুর পিতা ও নিকটাত্মীয়রা বিষয়টি সম্পর্কে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল হক বাবুর কাছে অভিযোগ করেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বাবুর নির্দেশে তার সমর্থকরা ধর্ষক হানিফকে ধরে নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেক লীগ নেতা নিজেই হানিফকে মারধর করেন। পরের দিন সোমবার রাতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার চেম্বারে বৈঠকে হানিফকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
জরিমানার এক লাখের মধ্যে ২০ হাজার টাকা ধর্ষিতার পিতাকে দেয়া হয়। বাকি ৮০ হাজার টাকা স্বেচ্ছাসবক লীগ নেতা বাবুসহ স্থানীয় কয়েকজন মাতব্বর ভাগবাটোয়ারা করে নেন।
এ প্রসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বাবু বলেন, হানিফ শিশুটিকে ধর্ষণ করে বড় অপরাধ করেছে। কিন্তু তার কাছে এসে ভুল স্বীকার করায় সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে ধর্ষক হানিফের উপযুক্ত বিচার করা হয়েছে। কিন্তু জরিমানার অর্থ ধর্ষিতার পিতাকে না দিয়ে আপনিসহ মাতব্বররা সিংহভাগ টাকা ভাগ করে কেন নিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়ার কোনো ঘটনা নেই। এর বেশি আমি বলতে পারব না।
শিশু ধর্ষণের সঙ্গে অভিযুক্তকে আর্থিক জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া এবং সে টাকা গ্রাম্য মাতব্বররা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়ায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, ধর্ষককে ধরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মারধর করে নিজেই বিচার করার ঘোষণা দেয়ার বিষয়টি গোদাগাড়ী থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে এলেও ধর্ষককে রহস্যজনক কারণে আটক করেনি। প্রসঙ্গে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি এসএম আবু ফরহাদ বলেন, ধর্ষণের বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.