১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি পাঁচ আসামির

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শফিউল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার পাঁচজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের হাজির করা হলে তারা জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানায়। বিকাল ৫টার দিকে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়। এদিকে, তৃতীয় দফায় অপর তিনজনতে আরও সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মতিহার থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, আসামিদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনা হিসেবে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ঠিকাদার আবদুস সামাদ পিন্টু ও তার সহযোগী সিরাজুল ইসলাম কালুকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এ, কাটাখালী পৌর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম ও সবুজকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ এবং আল মামুনকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৫ এ হাজির করা হয়।
প্রায় তিন ঘণ্টা পর তাদের ম্যাজিস্ট্রেটদের কক্ষ থেকে বের করা হয়। পরে প্রিজন ভ্যানে করে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়নি বলে যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মহানিগর পুলিশের উপকমিশনার তানভীর হায়দার চৌধুরী। এ বিষয়ে কোনো তথ্যই সাংবাদিকদের জানাননি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন। আসামিদের জেলহাজতে পাঠানোর প্রায় এক ঘণ্টা পর তিনি আদালত ভবন থেকে বের হলে সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে ধরেন। তবে তিনি কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে মতিহার জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনারের গাড়িতে চড়ে তিনি চলে যান।
এর আগে পিন্টুসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। রোববার ঢাকায় র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে আবদুস সামাদ পিন্টু বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় আমি অধ্যাপক শফিউলের সঙ্গে দেখা করতে যাই। কিন্তু তিনি আমার কথা না শুনে দূরদূর করে তাড়িয়ে দেন। এ অপমান আমি কোনোভাবেই মানতে পারিনি। তাই চিন্তা করলাম শফিউলকে সাইজ করতে হবে। এ জন্য আমি উজ্জ্বল ও মানিকের সঙ্গে কথা বলে তাদের সাহায্য চাই। তারা আমার কথামতো কাজ করেছে। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, অধ্যাপক শফিউল খুনের ঘটনায় ১১ জন জড়িত ছিল। এদের মধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। অপরদিকে, হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত ১১ জনের মধ্যে আরিফুর রহমান, জিন্নাহ আলী ও সাগরকে তৃতীয় সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।
বিচার দাবিতে রাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ চলছে : রাবি প্রতিনিধি জানান, অধ্যাপক ড. একেএম শফিউল ইসলাম লিলনের হত্যার বিচার দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ। সোমবার থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি চলবে বুধবার পর্যন্ত।

No comments

Powered by Blogger.