জেলগেটে ১৭ মিনিটের লতিফিয় নাটক

রীতিমতো নাটকীয় বিষয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এমন ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি। এর আগেও বহু মন্ত্রী-এমপিসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি কোন প্রতিবাদ ছাড়াই নীরবে মাথা নিচু করে ঢুকে গেছেন কারাগারে। কিন্তু মাথা নিচু করে কারাগারে ঢুকতে আপত্তি জানালেন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী। তিনি সাফ জানিয়ে দেন তিনি মাথা নিচু করে কারাগারে প্রবেশ করবেন না। তাকে কারাগারে নিতে হলে বড় গেট খুলতে হবে। লতিফ সিদ্দিকীর এ প্রস্তাবে বিব্রত হয় কারা কর্তৃপক্ষ। বাইরে তখন উৎসুক মানুষের ভিড়। ভিড় করেছেন গণমাধ্যম কর্মীরাও। কিন্তু নাছোড়বান্দা লতিফ সিদ্দিকীকে কিছুতেই বোঝাতে পারেননি কারা কর্তৃপক্ষ। এভাবে কেটে যায় ১৭ মিনিট। পরে অনেকটা বাধ্য হয়েই বড় গেট খুলে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত থেকে লতিফ সিদ্দিকীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়ার পর বেলা ৩টা ২৫ মিনিটে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে নেয়া হয়। এ সময় পুলিশ তাকে কারাগারের ছোট্ট পকেট গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতে বললে বেঁকে বসেন তিনি। লতিফ সিদ্দিকী এ সময় বলেন, ‘আমি এখনও এমপি। গত ৩০ বছরে আমি পকেট গেট দিয়ে ইন বা আউট হইনি। আমি মাথা নিচু করে কারাগারে ঢুকবো না।’ লতিফ সিদ্দিকীর এ কথার পর উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় হয়ে বুকের ওপর দুই হাত আড়াআড়ি রেখে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। এ সময় উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীরা তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোন প্রশ্নের উত্তর দেবেন না বলে মাথা নাড়ান লতিফ সিদ্দিকী। এক পর্যায়ে কারা কর্মকর্তারা বড় গেট খুলে দিলে ভেতরে ঢোকেন লতিফ সিদ্দিকী। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ফরমান আলী জানান, লতিফ সিদ্দিকীকে কারাফটকে আনার পরপরই একজন জেলার ভেতরে ঢুকছিলেন। এ সময় কারা ফটক খোলা হলে লতিফ সিদ্দিকীও ভেতরে ঢোকেন। কারা কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ইস্পাতের তৈরী মূল ফটকের গায়ে লাগোয়া ছোট আকারের ‘পকেট গেট’ দিয়েই তারা আসামি ও কয়েদিদের আনা নেয়া করেন। কখনও প্রিজন ভ্যান বা গাড়ি ঢোকানোর দরকার হলে অথবা বিশেষ প্রয়োজনে মূল ফটক খোলা হয়। এছাড়া কারাগারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের কেউ যখন ভেতরে ঢোকেন তখন সাধারণত বড় গেট খোলা হয়। এদিকে কারাগারের অপর একটি সূত্র জানায়, লতিফ সিদ্দিকীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিভিশন সেলে রাখা হয়েছে। সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি ডিভিশন সেল পান। এসব সেলে টিভি থেকে শুরু করে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.