টেন্ডার নিয়ে ছাত্রলীগ-ঠিকাদার ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া

বরিশালে গণপূর্ত বিভাগের ৪৪ কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঠিকাদারদের ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে র‌্যাব-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এই ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, বরিশালে মেরিন একাডেমি নির্মাণের জন্য ১৩ অক্টোবর ৫ গ্র“পের দরপত্র আহ্বান করা হয়। সোমবার দরপত্র বিক্রির শেষ দিন পর্যন্ত ২১ কোটি টাকায় একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজের বিপরীতে ১০টি, ১৮ কোটি টাকায় ডরমেটরি ভবন নির্মাণ কাজের বিপরীতে ৯টি, কমান্ডেন্টের বাসভবন নির্মাণের দেড় কোটি টাকার কাজের বিপরীতে ১০টি, ডেপুটি কমান্ডেন্টের বাস ভবন নির্মাণের দেড় কোটি টাকার কাজের বিপরীতে ৪টি এবং ভূমি উন্নয়নের (মাটি ভরাট) সোয়া ২ কোটি টাকার কাজের বিপরীতে ১৮টি দরপত্র বিক্রি হয়। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় প্যাকেজের কাজ বুধবার রাতেই সমঝোতার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। মঙ্গলবার সকালে গণপূর্ত অধিদফতরে নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে দরপত্র জমা দিতে গেলে সাধারণ ঠিকাদারদের দরপত্র জমাদানে বাধা ও পরে ধাওয়া করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের একটি অংশ। এ সময় প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার শফিকুল আলম গুলজারকেও বাধা দেয়া হয়। তিনি বাধা উপেক্ষা করে দরপত্র জমা দেন। কিন্তু এরপরই শুরু হয় তার দরপত্র প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ। জিলা স্কুলের মোড়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বাধা উপেক্ষা করে একটি দরপত্র দাখিল করেন আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান মিন্টু। ছাত্রলীগ নেতা জসিম ও অসীম তাকেও দরপত্র প্রত্যাহারে চাপ দেয়। মশিউর রহমান সাংবাদিকদের জানান, দরপত্র দাখিলের সময় সাধারণ ঠিকাদারদের কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেয় ছাত্রলীগ। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাধারণ ঠিকাদারদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে র‌্যাব-পুলিশ এসে লাঠিচার্জ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হঠিয়ে দেয়।
গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন জানান, তাদের বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী, ডিআইজি এবং বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে দরপত্র জমা দেয়ার জন্য টেন্ডার বাক্স রাখা হয়। তিনি শুনেছেন ঠিকাদাররা তার এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ে টেন্ডার জমা দিতে এলে ছাত্রলীগ কর্মীরা বাধা দেয়।
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবদুল গনি জানান, সাধারণ ঠিকাদারদের দরপত্র জমা দিতে বাধা দেয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ও র‌্যাবকে খবর দেয়া হয়।
র‌্যাব-পুলিশ দুটি কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে সাধারণ ঠিকাদারদের দরপত্র জমা দিতে সহযোগিতা করে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাখায়াত হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দরপত্র জমাদানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে লাঠিচার্জ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়া হয়। পরে শান্ত পরিবেশে সাধারণ ঠিকাদাররা দরপত্র জমা দেন।

No comments

Powered by Blogger.