মান্নানের যত অভিযোগ

ভোটকেন্দ্র দখল, পোলিং এজেন্টকে মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, জাল ভোট দেওয়া, ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের অবৈধ প্রভাব বিস্তার, প্রশাসনের সহযোগিতা না পাওয়াসহ নানা অভিযোগ করেছেন অধ্যাপক এম এ মান্নান।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত এই মেয়র পদপ্রার্থী গতকাল শনিবার সালনা সিনিয়র ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটদান শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেন।
বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে সকাল সোয়া ৯টার পর নিজ কেন্দ্রে আসেন এম এ মান্নান।
ভোট দেওয়ার আগে তিনি কেন্দ্রটি ঘুরে দেখেন এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁর কর্মী-সমর্থকরা স্কুল মাঠে 'টেলিভিশন, টেলিভিশন' বলে স্লোগান দিতে থাকে।
ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে অধ্যাপক মান্নান সাংবাদিকদের জানান, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী। তবে শেষ পর্যন্ত ভোট সুষ্ঠু হবে কি না তা নিয়ে তিনি সংশয় প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে ভোট সুষ্ঠু হলে ফল মেনে নেবেন বলেও জানান তিনি।
অধ্যাপক মান্নান অভিযোগ করেন, তাঁর তিনজন কর্মীর ওপর শুক্রবার রাতে পুলিশ ও র‌্যাব হামলা চালিয়েছে বলে খবর পেয়েছেন তিনি। নির্বাচন কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এখন পর্যন্ত যতটুকু জেনেছি তাতে মোটামুটি ভোট হচ্ছে।' জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হলে আমি শতভাগ আশাবাদী। বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমরা জয়ী হব, টেলিভিশন জয়ী হবে ইনশাআল্লাহ।' অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'নির্বাচন নিয়ে সংশয় আছে। সরকারি দলের লোকজন গত কয়েক দিনে এখানে এসে যে কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে, যে প্রভাব খাটিয়েছে, তাতে নির্বাচন অবাধ হবে কি না তা নিয়ে সংশয় আছে।'
বিএনপি সমর্থিত এই মেয়র পদপ্রার্থী বলেন, 'আমরা খবর পেয়েছি যে শুক্রবার ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লার লোকজনের কাছে কিছু ব্যালট পেপার দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো তারা সিল মেরে দলীয় প্রিসাইডিং অফিসারের মাধ্যমে বাক্সে ফেলবে।'
অধ্যাপক মান্নানের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট হাসান উদ্দিন সরকার জেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। তাতে বলা হয়, কয়েকটি স্থানে সরকারদলীয় কর্মীরা ভোটকেন্দ্র দখল করেছে। কোথাও কোথাও পোলিং এজেন্টকে মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি স্থানে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্র দখল করা হয়েছে। পোলিং এজেন্ট মারধর করে বের করে দেওয়া, জাল ভোট দেওয়া, সরকারি দলের লোকজন প্রভাব, প্রশাসনের সহযোগিতা না করাসহ নানা অভিযোগ করেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে ১৮ দল সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান।
সকালে নিজের কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর দিনভর টঙ্গী, গাজীপুর ও জয়দেবপুরের অর্ধশতাধিক কেন্দ্র ঘুরে দেখেন মেয়র পদপ্রার্থী এম এ মান্নান। তিনি ভাষণ-বরুদা এলাকার বেশ কয়েকটি কেন্দ্র, মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নান্দুয়ান প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি রানী বিলাস বালক উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজ, কাজী আজিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ, শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। দুপুরে টঙ্গীতে এক বিএনপি নেতার বাসায় মধ্যাহ্ন ভোজ সেরে সেখান থেকে বেরিয়ে আবার এক কেন্দ্র থেকে আরেক কেন্দ্রে ছুটে যান। এভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি একের পর এক কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

No comments

Powered by Blogger.