মার্কিন নজরদারির প্রতিবাদ দুই চুক্তি স্থগিতের হুমকি ইইউর

গইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) তথ্য-উপাত্তসংক্রান্ত নীতিমালার প্রতি ওয়াশিংটন শ্রদ্ধাশীল না হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে থাকা দুটি চুক্তি স্থগিত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইউরোপীয় দেশগুলোর জোটটি।
চুক্তি দুটির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রকে ইউরোপের আর্থিক ও ভ্রমণসংক্রান্ত গোপন তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করা হয়ে থাকে। গত শুক্রবার ইইউর কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে নয়-এগারোর সন্ত্রাসবাদী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইইউর সঙ্গে চুক্তি দুটি স্বাক্ষর করা হয়। তথ্য-উপাত্ত আদান-প্রদানবিষয়ক চুক্তি দুটিকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করে থাকে ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইইউ ও ইউরোপের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওপর ব্যাপক নজরদারির অভিযোগের বিষয়ে ইইউ যে চুপচাপ বসে থাকবে না—প্রভাবশালী আঞ্চলিক জোটটির হুঁশিয়ারিতে তারই প্রতিফলন ঘটেছে।
ইইউর অভ্যন্তরীণবিষয়ক কমিশনার সিসিলিয়া মামস্ট্রম গত বৃহস্পতিবার চুক্তি দুটির বাস্তবায়নের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী জ্যানেট নাপোলিটানো এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসবাদ ও অর্থসংক্রান্ত গোয়েন্দা দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি ডেভিড কোহেনকে চিঠি লিখেছেন।
মামস্ট্রম চিঠিতে বলেন, ‘চুক্তি দুটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমরা নাগরিকদের অধিকার ক্ষুণ্ন হতে দিতে পারি না। আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই আমরা চুক্তিগুলো বাস্তবায়ন করেছি। তবে চুক্তির গ্রহণযোগ্যতা এখন মারাত্মক ধাক্কা খেয়েছে এবং এর পুরোপুরি বাস্তবায়নের বিষয়টি আমরা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছি।’
যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর সম্পর্ক ‘কঠিন সময়ের’ মধ্য দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মামস্ট্রম চিঠিতে আরও বলেন, ‘পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা বিরাট ধাক্কা খেয়েছে এবং আমি আশা করি, পারস্পরিক বিশ্বাস পুনস্থাপনে যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
চুক্তি দুটি পর্যালোচনার জন্য পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে অভ্যন্তরীণবিষয়ক কমিশনার মামস্ট্রম আগামী সপ্তাহেই ইইউর কর্মকর্তাদের একটি দলকে ওয়াশিংটনে পাঠাবেন।
এদিকে ফ্রান্সের গোয়েন্দা সংস্থা সে দেশের নাগরিকদের ওপর ব্যাপক পরিসরে গোপন নজরদারি চালাচ্ছে মর্মে ওঠা অভিযোগ ফ্রান্সের কর্মকর্তারা উড়িয়ে দিয়েছেন। ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জ্যাঁ-মার্ক এহোর মুখপাত্র লো মঁদ পত্রিকার কাছে ওই অভিযোগকে ‘অযথার্থ’ বলে অভিহিত করেছেন।
ওবামা প্রশাসনের আহ্বান: ফোনে ব্যাপক আড়িপাতার বিষয়ে মতামত না দেওয়ার জন্য গত শুক্রবার ওবামা প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিলেন্স কোর্টের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন ওই আদালতের প্রতি আড়িপাতার বিষয়ে মতামত দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।
ওই আদালতে দেওয়া নথিপত্রে মার্কিন বিচার বিভাগের অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বলেছেন, জনগণ গোপন নজরদারির বিষয়ে আদালত থেকে মতামত চাওয়ার অধিকার পেলে তার সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে ‘বাস্তব ও উল্লেখযোগ্য’। রয়টার্স ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.