মহাজোট নেতাদের প্রতিক্রিয়া প্রমাণিত হলো, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে

নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার এবং বিএনপি-জামায়াত জোটের অর্থ ও পেশিশক্তির প্রভাবে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আজমত উল্লা খানের পরাজয় হয়েছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট নেতারা।
তবে তাঁরা এও বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে, ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে।
গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মহাজোট-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খানের পরাজয়ের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের ভোটের দুর্গে এমন হানা দেওয়ার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না মহাজোট নেতাদের কেউ কেউ।
নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার পর প্রথম দিকে আজমত উল্লা খানের অবস্থান ভালো ছিল না। কিন্তু মহাজোটগত সমর্থন পাওয়ার পর আজমত উল্লার জয়ের ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছিলেন অনেকেই।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ প্রথম আলোকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বিএনপি এ নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা পারেনি। প্রমাণিত হয়েছে, নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে ক্ষমতাসীন দলের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব। এ নির্বাচনে সরকারি দল ন্যূনতম কোনো প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেনি বলেও জানান তোফায়েল আহমেদ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, গাজীপুরে দলের দুজন নেতা যথাযথ দায়িত্ব পালন করেননি। তা ছাড়া মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এক সুযোগসন্ধানী স্থানীয় জনগণকে জিম্মি করে রাতারাতি অর্থবিত্ত বানিয়ে এই সিটির মেয়র হতে চেয়েছিলেন। নির্বাচন নিয়ে এ সুযোগসন্ধানীর নাটক, জনগণের সঙ্গে তাঁর প্রহসন প্রভৃতি কারণে এলাকার মানুষ সরকারের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠে।
১৪ দলের অন্যতম নেতা ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, চার সিটি করপোরেশনের ফলাফলের ধারাবাহিকতা, জাতীয় রাজনীতির প্রভাব, নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার ও বিএনপি-জামায়াত জোটের অর্থ ও পেশিশক্তির প্রভাবে মহাজোটের প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের যে ঐতিহ্য আমরা অর্জন করেছি, তা টিকিয়ে রাখা আমাদেরই দায়িত্ব। দলীয় সরকার থাকলেও নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে যে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব, এই নির্বাচন তার বড় প্রমাণ।’
১৪ দলের নেতা, জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। ভোটের ফলাফল যা-ই হোক, তা সবার মেনে নেওয়া উচিত। ভোটের ফল পক্ষে থাকলে মানব আর বিপক্ষে থাকলে মানব না, এটা হতে পারে না।’
জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এই নির্বাচনে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে। বিজয়ী হয়েছে মানুষের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের। এই নির্বাচন থেকে সবার শিক্ষা নেওয়া উচিত।

No comments

Powered by Blogger.