সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট নাগরিকেরা ইউনূসের অবদানে আমরা গর্বিত

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘অনেকে বলেন, ড. ইউনূসকে সালাম দিতেও ভয় লাগে। কোন সময় কোন বিপদে পড়ি। কিন্তু আমাদের সমাজ এমন ছিল না। পরিবারের মধ্যেও ভিন্ন মত থাকে।
কিন্তু এখন অবস্থা এমন হয়েছে যে একজনকে কেউ এক পাশে দেখলে অন্যজন অপর পাশে গিয়ে বসে।’
গতকাল শনিবার এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস এসব কথা বলেন। এর জবাবে বিশিষ্ট নাগরিকেরা ইউনূসের বিভিন্ন অবদানের কথা উল্লেখ করে তাঁর প্রশংসা করেন। তাঁরা আরও বলেন, ইউনূসের অবদানের জন্য তাঁরা গর্বিত।
মুহাম্মদ ইউনূসের পারিবারিক বন্ধু সাবেক সচিব এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এ ওয়াই বি আই সিদ্দিকী পরিবারের পক্ষ থেকে নোবেল শান্তি পুরস্কারসহ যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেশনাল মেডেল ও রাষ্ট্রপতির মেডেল প্রাপ্তি উপলক্ষে তাঁকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস এবং ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান স্যার ফজলে হাসান আবেদকে স্মারক ক্রেস্ট দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ফজলে হাসান আবেদ বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস ক্ষুদ্রঋণকে দারিদ্র্য বিমোচনের অস্ত্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছেন। পৃথিবীর অনেক দেশই দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ক্ষুদ্রঋণকে ব্যবহার করছে। ইউনূসের কারণে আজ বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আমরা গর্বিত।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, বাজার অর্থনীতি যাদের দিকে মনোযোগ দিত না, যাদের কল্যাণে কিছু করত না, সেই মানুষদের ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে ড. ইউনূস শক্তিশালী করে তুলেছেন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান বলেন, ‘অনেকে দলিল-দস্তাবেজ ঘেঁটে বের করেছেন, আমি নাকি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় অধ্যাপক ইউনূসকে সব ক্ষমতা দিয়ে রেখেছিলাম। হ্যাঁ, আমরা বোর্ডের সদস্যরা আলোচনা করেই ঋণ অনুমোদন, পদোন্নতিসহ অনেক কিছুর ক্ষমতা দিয়েছিলাম। এ কারণেই গ্রামীণ ব্যাংক ও ইউনূস নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।’
অনুষ্ঠানে ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী লতিফুর রহমান বলেন, অধ্যাপক ইউনূস হচ্ছেন সেই ব্যক্তি, যিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পরও থেমে নেই। দেশের জন্য, বিশ্বের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
এ ওয়াই বি আই সিদ্দিকীর ছেলে ও ইউনাইটেড ব্যাংক অব সুইজারল্যান্ডের অন্যতম ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক লুৎফে সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন তাঁর মা রেহানা সিদ্দিকী।
অনুষ্ঠানে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি, অর্থনীতিবিদ, সাবেক আমলা ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

No comments

Powered by Blogger.