হতাশা থেকে আত্মহননের কথা ভেবেছিলেন ম্যানিং

উইকিলিকসের হাতে গোপন তথ্য তুলে দেওয়ার অভিযোগে আটক মার্কিন সেনা ব্র্যাডলি ম্যানিংয়ের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে- এ অভিযোগ পুরনো। তবে শুক্রবার প্রথমবারের মতো বিচারপূর্ব শুনানিতে এ সেনা জানান, একবার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহননের কথা ভেবেছিলেন তিনি।
আটক হওয়ার পর কুয়েতের সেনাঘাঁটিতে বিছানার চাদর পেঁচিয়ে ফাঁসও তৈরি করেছিলেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া দুই দিনের এ শুনানিতে নির্যাতনের বেশ কয়েকটি কাহিনীও শোনান তিনি।
২০১০ সালের মে মাসে ইরাক থেকে আটক করা হয় ম্যানিংকে (২৪)। মেরিল্যান্ডের ফোর্ট মিডে শুক্রবারের শুনানিতে মানিং দাবি করেন, জেলে তাঁর ওপর যে ধরনের নির্যাতন হয়েছে_তাতে উইকিলিকসের কাছে তথ্য ফাঁসের অভিযোগ বাতিল করা উচিত। তাঁর বিরুদ্ধে বর্তমানে শত্রুকে সহায়তাসহ ২২টি অভিযোগ রয়েছে। প্রমাণ হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
ম্যানিং জানান, তাঁর বন্দিজীবনের সবচেয়ে বাজে সময় কেটেছে কুয়েতে। ওই সময়ই চরম হাতাশা থেকে আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন তিনি। তাঁর ভাষায়, 'কুয়েতে সব সময় ছক কষেছি, তবে কাজটি করা আর হয়ে ওঠেনি।' কুয়েত থেকে দুই মাস পর ভার্জিনিয়ার কুয়ান্টিকো সামরিক কারাগারে সরিয়ে নেওয়া হয় তাঁকে। এরপর আর আত্মহননের কথা ভাবেননি তিনি। কুয়ান্টিকোতেও কঠিন জীবনযাপনে বাধ্য হন তিনি। প্রায় ৯ মাস দিনের ২৩ ঘণ্টা ছোট্ট একটা ঘরে তাঁকে একা রাখা হয়। বহু রাত নগ্ন হয়ে ঘুমাতে বাধ্য করা হয় তাঁকে । ডাণ্ডাবেঁড়ি ছাড়া কখনোই রুমের বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। এক সকালে কারা আদালতে একদম নগ্ন অবস্থায় হাজির করা হয় তাঁকে। তাঁর ভাষায়, 'মোজা, অন্তর্বাস কিছুই দেওয়া হয়নি। এমনকি চশমাটাও রেখে দিয়েছিল তারা।' অভিযোগ রয়েছে, উইকিলিকসের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় আড়াই লাখ গোপন কূটনৈতিক বার্তা ফাঁস করে দেন ম্যানিং। বর্তমানে তিনি কানসাসের ফোর্ট লিভেনওয়ার্থ কারাগারে রয়েছেন। আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে তাঁর বিচার শুরু হবে।
আরো গোপন নথি প্রকাশ করব : উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ক্যাবলগেট কেলেঙ্কারির দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে লেখা এক নিবন্ধে বলেছেন, এ ধরনের আরো নথি প্রকাশ করবেন তিনি। সূত্র : জিনিউজ, বিবিবি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.