আল-জাজিরার বিশ্লেষণ- ফিলিস্তিন: আরও বহু পথ বাকি

ফিলিস্তিন জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা পেয়েছে। কিন্তু এই ঐতিহাসিক অর্জনে দেশটির জনগণের জীবনযাত্রায় সামান্যই পরিবর্তন হয়েছে। কারণ, দেশটি রাজনৈতিক ও ভৌগোলিকভাবে এখনো বিভক্ত রয়ে গেছে।
পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। অন্যদিকে, গাজা উপত্যকা শাসন করছে হামাস। তবে নিজ নিজ স্থল ও আকাশসীমায় তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। এ ছাড়া ফিলিস্তিনে কোনো ঐক্যবদ্ধ নিরাপত্তা বাহিনী বা পুলিশ নেই। অর্থনৈতিক অবস্থা এখনো নাজুক রয়ে গেছে; বেকারত্ব গ্রাস করছে যুব সমাজকে; দারিদ্র্যের বিস্তার সবখানে। গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ অব্যাহত রয়েছে; শান্তি-প্রক্রিয়ায় অচলাবস্থা কাটেনি, নতুন উদ্যোগের সম্ভাবনা আপাতত নেই। কিন্তু তার পরও ফিলিস্তিন এখন নতুন এক সন্ধিক্ষণ অতিক্রম করছে।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের অবস্থান ‘পর্যবেক্ষক’ থেকে ‘পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রে’ উন্নীত হওয়ায় কেবল একটি শব্দই বাড়েনি, দেশটির কূটনৈতিক ও প্রতীকী গুরুত্ব বেড়েছে অনেক। জাতিসংঘে নতুন অবস্থান অর্জনকে ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি এবং আন্তর্জাতিক জনমতের প্রতিফলন হিসেবে বিবেচনা করছে দেশটির লোকজন। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বলেছেন, তাঁর দেশকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার সময় এসেছে। ফিলিস্তিনের ব্যাপারে অবস্থান সম্পর্কে বিশ্বকে এখন স্পষ্ট মতামত জানাতে হবে।
ফিলিস্তিনকে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষমতা কেবল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদেরই রয়েছে। ফিলিস্তিনিরা নিজেদের স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। দেশটিকে স্বীকৃতি দেওয়ার একটি প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে গত বছর মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে বাতিল হয়ে যায়। অবশ্য ওই ভোট পেলেও প্রস্তাবটি সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার (ভেটো) মুখোমুখি হতো।
জাতিসংঘে ভোট দেওয়ার অধিকার এখনো পায়নি ফিলিস্তিন। তবে দেশটি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতসহ (আইসিসি) জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের সদস্য হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.