জেন্ডার-সাম্য প্রতিষ্ঠায় নতুন আইন হচ্ছে ফ্রান্সে

নারী স্বাধীনতার পক্ষে সরব ফ্রান্স জেন্ডার-সাম্য প্রতিষ্ঠায় নতুন আইন প্রণয়ন করছে। এতে নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে বিরাজমান মজুরি বৈষম্যের অবসান হবে। পাশাপাশি ছয় বছর বয়সী শিশুদের পাঠ্যক্রমে 'জেন্ডার-সাম্য বিষয়ক প্রাথমিক পাঠ' অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
পারিবারিক সহিংসতা ঠেকাতে কঠোর আইনও বলবৎ হচ্ছে।
নারী অধিকারবিষয়ক মন্ত্রী নাজাত ভেলু বেলবাসেম গত বৃহস্পতিবার বলেন, '১৯৪৪ সালে ভোটের অধিকার পায় ফরাসি নারীরা। গর্ভপাত বৈধ হয় ১৯৭৫ সালে। এবারেরটি হবে সাম্য প্রতিষ্ঠায় তৃতীয় প্রজন্মের আইন।' গত ১২ বছরের মধ্যে বৃহস্পতিবারই প্রথমবারের মতো নারী অধিকার নিয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক হয়।
নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, মারধরের হুমকি, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ, অসম্মানের ক্ষেত্রে পুরুষ সঙ্গীর তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের নিয়ম করা হচ্ছে। এ ছাড়া সঙ্গীর কাছ থেকে হুমকির মুখে থাকলে বিনা পয়সায় পুলিশকে ফোন করে জানাতে পারবে নারীরা।
এতে আরো বলা হয়, একই পদে নারী-পুরুষের সমান বেতন নিশ্চিত করতে বড় বড় কম্পানিতে পরিদর্শক দল পাঠানো হবে। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, একই ধরনের কাজে নারীদের আয় পুরুষদের তুলনায় ২৭ শতাংশ কম। প্রতি তিনজনে একজন নারী খণ্ডকালীন কাজ করে। ইচ্ছা করে নয়, বরং কাজ পায় না দেখেই এ ধরনের কাজে ঢুকতে বাধ্য হয় তারা। অবসর ভাতার ক্ষেত্রেও পুরুষদের তুলনায় ৪০ শতাংশ কম পায় নারীরা। পার্লামেন্টে নারী প্রতিনিধিদের সংখ্যা মাত্র ২৭ শতাংশ।
এ ছাড়া সামনের বছর থেকে পড়তে শুরু করা শিশুদের পাঠ্যক্রমে লৈঙ্গিক সাম্যবিষয়ক পাঠ অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ছয় থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুরা এ পাঠ নেবে।
লৈঙ্গিক সাম্যের ক্ষেত্রে ফ্রান্সের অবস্থান এখন পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর মধ্যে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ২০১২ সালের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফ্রান্স আছে ৫৭ নম্বরে। এ ক্ষেত্রে তারা শুধু ব্রিটেনের (১৮তম) মতো পশ্চিমা দেশই নয়, বরং ভেনিজুয়েলা বা কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের মতো দেশগুলোর চেয়েও অনেকটাই পেছনে। নারী ও পুরুষের মজুরি সাম্য সূচকেও ১৩৫টি দেশের মধ্যে ১২৯ নম্বরে আছে ফ্রান্স। সূত্র : টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.