অ্যাম্বুলেন্স না দেওয়ায় সিভিল সার্জনের ওপর হামলা

লাশ বহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালিয়েছেন মৃতের স্বজনেরা। তাঁরা সিভিল সার্জন, জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীসহ পাঁচজনকে মারধর করেন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।


এর প্রতিবাদে চিকিৎসকেরা সভা করে আজ শনিবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলার সব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদুল হক বলেন, সদর হাসপাতালে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সিভিল সার্জন আবদুল ওহাব হাওলাদার। মামলার আসামিরা হলেন: সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল ফজল মাস্টারের ছেলে অনু মেহেদী, ভাতিজা রতন মিয়া, আতিকুর রহমান, সজীব ব্যাপারি ও সৈকত মাহমুদ।
সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, সোনালী ব্যাংকের শরীয়তপুর শাখার মুখ্য কর্মকর্তা ও নড়িয়া উপজেলার সাওরা গ্রামের বাসিন্দা ইলিয়াস হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়লে গতকাল রাত আটটার দিকে তাঁর স্বজন ও বন্ধুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর লাশ বাড়িতে নেওয়ার জন্য ইলিয়াসের স্বজন ও বন্ধুরা কর্তব্য চিকিৎসকের কাছে অ্যাম্বুলেন্স দাবি করেন। লাশ পরিবহনে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার নিয়ম নেই জানালে তাঁরা উত্তেজিত হয়ে জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালান। একপর্যায়ে ইলিয়াসের ক্ষুব্ধ স্বজনেরা শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন আবদুল ওহাব হাওলাদার, চিকিৎসা কর্মকর্তা সিফাত জাহান, হাসপাতালের কর্মী সমশের, নাজমুল ও সিহাবুলকে মারধর করেন। তাঁরা সিভিল সার্জনের মুখমণ্ডলে আঘাত করেন।
এর প্রতিবাদে রাতেই সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে জরুরি সভা করেন চিকিৎসকেরা। দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আজ সকাল থেকে জেলার সব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আহত চিকিৎসা কর্মকর্তা সিফাত জাহান।
সিভিল সার্জন আবদুল ওহাব হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই ঘটনা বলার কোনো ভাষা নেই। এভাবে চলতে থাকলে সরকারি দায়িত্ব পালন করা কঠিন হয়ে যাবে।’
হামলার ব্যাপারে আসামি রতন মিয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মৃত ইলিয়াস আমার বন্ধু। অসুস্থ হলে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সে মারা যাওয়ার পর হাসপাতালে অনেক লোক জড়ো হয়েছিল। সিভিল সার্জনের ওপর কারা হামলা চালিয়েছে, আমি জানি না।’

No comments

Powered by Blogger.