বিদ্যুতের অভাবে অনেকটাই অচল থ্রিজি টাওয়ার- টেলিটকের থ্রিজি উদ্বোধন কাল

দেশের সরকারি মুঠোফোন অপারেটর টেলিটকের থ্রিজি (তৃতীয় প্রজন্ম) প্রযুক্তি উদ্বোধন করা হবে কাল রোববার। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে উদ্বোধন হলেও থ্রিজি-সেবা গ্রাহকেরা কবে এবং কতটুকু উপভোগ করতে পারবেন—এ প্রশ্ন সংশ্লিষ্টদের।


কেননা, টেলিটক এখনো সম্পূর্ণ প্রস্তুত নয়। তাদের বিটিএসগুলোতে (বেইজ ট্রান্সিভার স্টেশন) বিদ্যুৎ-সংযোগ যায়নি। জানা গেছে, খোদ রাজধানীর অধিকাংশ বিটিএস বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। বারবার আবেদন করেও এসব বিটিএসের জন্য বিদ্যুৎ পাচ্ছে না টেলিটক। এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকেও বারবার আবেদন জানানো হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়। এ ছাড়া রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন এলাকায় টেলিটকের নেটওয়ার্ক উন্নয়নে বসানো প্রায় দুই হাজার নতুন বিটিএসে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি।
টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান গতকাল শুক্রবার এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, উদ্বোধনের পরও রাজধানীর ৫০-৬০টি নতুন বিটিএসে বিদ্যুৎ-সংযোগ পেতে আরও ১৫-২০ দিনের মতো লাগতে পারে বলে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
মুঠোফোনে তৃতীয় প্রজন্মের প্রযুক্তির (থ্রিজি) মাধ্যমে মুঠোফোনে কথা বলা যাবে অপর পক্ষের ছবি দেখে। টেলিভিশন দেখা বা ভিডিও কনফারেন্স করা যাবে সহজেই। ফলে সহজলভ্য হয়ে উঠবে এম-হেলথ (অনলাইন স্বাস্থ্যসেবা), এম-ব্যাংকিং (মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন), এম-এডুকেশনসহ (অনলাইন শিক্ষাসেবা) বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন ভিত্তিক জনগুরুত্বপূর্ণ জরুরি সেবা। শহরের সব সড়কের গাড়ির গতিবিধি দেখে অনাকাঙ্ক্ষিত যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে ট্রাফিক পুলিশ।
সেবা পেতে সময় লাগবে: গ্রাহকদের থ্রিজি প্রযুক্তির উপকারিতা পেতে কমপক্ষে আরও তিন মাস লাগবে বলে জানান টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান। আর যেসব টেলিটক গ্রাহক থ্রিজি পেতে টাকা দিয়ে নিয়ম মেনে অপেক্ষা করছেন, তাঁরা কবে থেকে থ্রিজি সুবিধা পাবেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, উদ্বোধনের পর টেলিটক গ্রাহকদের পর্যায়ক্রমে থ্রিজি সেবা দিতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। থ্রিজি সামনে রেখে ইতিমধ্যে ঢাকার ৩২৮টি বিটিএসে নতুন প্রযুক্তি বসানোর কাজও শেষ করা হয়েছে।
বিটিআরসির কারিগরি প্রস্তুতি: বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২১০০ থেকে ২৪০০ ব্যান্ডে অন্তত পাঁচ অপারেটর থ্রিজি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতে পারবে, সে ধরনের স্পেকট্রাম/তরঙ্গ বরাদ্দ রাখা আছে।
তরঙ্গ সম্পর্কে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদ জানান, এ পর্যন্ত ছয়টি মুঠোফোন অপারেটর ও অন্যান্য টেলিযোগাযোগ কোম্পানির মধ্যে বিভিন্ন ব্যান্ডে ৯২টি ফ্রিকোয়েন্সি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে বেশকিছু ফ্রিকোয়েন্সি এখনো অব্যবহূত। তরঙ্গ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সেগুলোকেও থ্রিজি লাইসেন্সপ্রাপ্তদের মাঝে নতুন করে বরাদ্দ করা সম্ভব হবে।
থ্রিজি নিয়ে বিটিআরসি আগামী বছরের শুরুতে নিলাম করবে বলে জানান বিটিআরসির নতুন চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান মুঠোফোন অপারেটরদের মধ্যে যোগ্য কয়েকটি এবং প্রয়োজনে বিদেশি নতুন কোনো যোগ্য অপারেটরকেও লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়টি সরকারি পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.