যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন- বিতর্কমঞ্চে আক্রমণাত্মক বাইডেন ও রায়ান

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন ও রিপাবলিকান পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী পল রায়ান গত বৃহস্পতিবার রাতে (বাংলাদেশ সময় গতকাল শুক্রবার) সরাসরি বিতর্কে অংশ নিয়েছেন।


এ সময় তাঁরা পরস্পরকে তিক্ত বাক্যবাণে জর্জরিত করেন। তবে বিতর্কে জো বাইডেন ছিলেন অপেক্ষাকৃত বেশি আক্রমণাত্মক।
কেনটাকি অঙ্গরাজ্যের সেন্টার কলেজে অনুষ্ঠিত বিতর্কে সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন এবিসি নিউজের মারথা রাদ্দাৎজ। বিতর্ককালে দুই প্রার্থীকে শান্ত রাখতে মারথা জোর চেষ্টা চালান।
জো বাইডেনকে বিতর্কের মঞ্চে শুরুতেই আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা গেছে। তিনি অপেক্ষাকৃত শান্ত প্রতিদ্বন্দ্বী পল রায়ানের বক্তব্যে প্রায়ই হস্তক্ষেপ করে বাধা সৃষ্টি করছিলেন।
উইসকনসিন থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য পল রায়ানের এটি ছিল জাতীয় পর্যায়ে কোনো বিতর্কে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ। স্বাভাবিকভাবে তিনি তুলনামূলক শান্ত ছিলেন।
রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মিট রমনির সঙ্গে গত সপ্তাহে বিতর্কে বারাক ওবামা তেমন সুবিধা করে উঠতে না পারার পর ডেমোক্র্যাটরা তাঁদের নির্বাচনী প্রচারণায় গতি ফেরানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ অবস্থার মধ্যে দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী এই বিতর্কে অংশ নিলেন। ওবামার সঙ্গে বিতর্কের পর বিভিন্ন জনমত জরিপে ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মিট রমনির পক্ষে সমর্থন বাড়তে দেখা যায়।
কিন্তু তাঁর রানিংমেট (ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী) জো বাইডেন বৃহস্পতিবারের বিতর্কে কর, সরকারি ব্যয়, অর্থনীতি ও অন্যান্য বিষয়ে রমনির নীতির বিরুদ্ধে ছিলেন ঠিক অতটাই বিপরীত। বাইডেন রায়ানকে তাঁর বক্তব্যদানকালে ক্রমাগত থামিয়ে দেন, ইতস্তত এদিক-সেদিক তাকান ও হাত তুলে অসহিষ্ণুতা প্রকাশ করেন। অবশ্য রায়ানকে ‘বন্ধু’ বলে সম্বোধন করতে ভুল করেননি তিনি।
বিশ্লেষকেরা বলেন, বিতর্কে রায়ানকে উত্তেজিত না দেখা গেলেও ওবামা-শিবিরের প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে সম্প্রতি রমনির পাওয়া সফলতার সমর্থনে যুক্তি তুলে ধরাই ছিল তাঁর প্রধান লক্ষ্য।
বিতর্কের শুরুতেই স্থান পায় লিবিয়া প্রসঙ্গ। গত মাসে দেশটির বেনগাজি শহরে যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলেটে হামলায় এক সেনা ও দুই কর্মকর্তার পাশাপাশি মার্কিন রাষ্ট্রদূতও নিহত হন। ওবামা প্রশাসন একে এখন সন্ত্রাসী হামলা বলে আখ্যায়িত করছে। এই প্রশাসন ওই পরিস্থিতি যেভাবে সামাল দিয়েছে, বাইডেন তার সাফাই গান। রমনির সমালোচনা করে তিনি বলেন, হামলার পরদিন সকালে রিপাবলিকানদের রাজনৈতিক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা “প্রেসিডেন্টসুলভ নেতৃত্বের” সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। জবাবে রায়ান বলেন, লিবিয়ায় কূটনীতিকদের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরালো করার আহ্বান অগ্রাহ্য করেছে ওবামা সরকার।
বিতর্কে দুই নেতা ইরান ও ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়েও নিজ নিজ অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। কিন্তু এ বিষয়ে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিতে তেমন মৌলিক তফাত পরিলক্ষিত হয়নি। বিবিসি ও নিউইয়র্ক টাইমস।

No comments

Powered by Blogger.