রসকারণ-আয়নায় চেহারা দেখি কীভাবে? by আব্দুল কাইয়ুম

খুব সুন্দরভাবে নিজের চেহারা প্রতিফলিত হওয়ার উপায় হিসেবে আয়নার আবিষ্কার এক যুগান্তকারী ঘটনা। এটি না হলে মানুষের জীবন অনেকাংশে অর্থহীন হয়ে যেত। সাজগোজ করে অনুষ্ঠানে যাব, সেখানে আমাকে কেমন দেখাবে, সেটা যদি নিজের চোখে পরীক্ষা করতে না পারি, তাহলে মনে অতৃপ্তি থেকে যায়। তাই আয়না ছাড়া চলে না।

কিন্তু আয়না কীভাবে প্রতিফলন ঘটায়? লক্ষ করলে দেখা যাবে, আয়নার প্রধান অংশ হলো এক খণ্ড স্বচ্ছ কাচ, যার পেছনের স্তর থেকে প্রতিফলন ঘটে। সেখানে থাকে এক পরত রুপালি ধাতব পদার্থের আস্তরণ। এটাই আমাদের চেহারা নিপুণভাবে ফিরিয়ে দেয়, আর তখনই আমরা আমাদের প্রতিরূপ দেখতে পাই। সব ধাতব পদার্থই চকচকে এবং প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম। কারণ, এর অণুগুলো একগুচ্ছ সঞ্চরমাণ ইলেক্ট্রন ঘিরে রাখে। কোনো বিশেষ অণুর প্রতি এই ইলেক্ট্রনগুলোর আকর্ষণ থাকে না। আয়নার রুপালি ধাতব পদার্থের বন্ধনহীন ইলেক্ট্রনগুলো যেমন কোনো বিশেষ অণুর সঙ্গে যুক্ত থাকে না, তেমনি কোনো বিশেষ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোকরশ্মি শুষে নেওয়ার প্রবণতাও দেখায় না। সব ধরনের আলোকরশ্মিই তারা প্রত্যাখ্যান করে এবং ফেরত পাঠায়। তাহলে আয়নার দরকার কী, এক টুকরো রুপালি ধাতব পদার্থই তো আয়নার কাজ করতে পারে? তা পারে, তবে সেটা দ্রুত ঝাপসা হয়ে যায়। সে জন্যই কাচের পেছনে প্রলেপ দিয়ে আয়না তৈরি করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.