স্বপ্ন নিয়েকে সুমাইয়া কাজি-বাংলাদেশি তরুণদের সঙ্গে কাজ করতে চাই

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সুমাইয়া কাজির সফলতার গল্প গত সংখ্যায় ছাপা হয়েছিল ‘স্বপ্ন নিয়ে’ পাতায়। স্বপ্ন নিয়ের পক্ষ তাঁকে সরাসরি কিছু প্রশ্ন পাঠানো হয়েছিল। সুমাইয়া সেগুলোর উত্তর পাঠিয়েছেন। হাতে পাওয়া মাত্রই তা ছাপা হলো।
রয়টার্সের স্বীকৃতির পর আপনার অনুভূতি কী?

স্বীকৃতি পাওয়া অবশ্যই দারুণ একটা ব্যাপার। এ ছাড়া তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এটা একটা দারুণ সাড়া ফেলে যে তাদের মতোই একজন এ সফলতা অর্জন করেছে। বিশেষ করে একজন তরুণ বাংলাদেশি নারী হিসেবে এমন সফলতা পেয়েছি, যা সত্যিই অনেক ভালো লাগার বিষয়।
বাংলাদেশ নিয়ে আপনার অনুভূতি কেমন? বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে আপনার পরিকল্পনা আছে কি?
আমি মনে করি বাংলাদেশিরা অনেক পরিশ্রমী ও স্মার্ট। সুযোগ পেলে তারা ভালো কিছু করতে পারে। গত বছর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত একটি আয়োজনে এসেছিলাম। আশা করছি এ বছরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছরের শুরুতে বাংলাদেশে আসব।
বাংলাদেশ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
আমার ইচ্ছা আছে সুমাজি ডট কম নিয়ে বাংলাদেশের তরুণদের সঙ্গে কাজ করার। সুমাজি ডট কম বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে চাই, যাতে করে সাধারণ মানুষ নিজেদের নেটওয়ার্কের মধ্যে আসতে পারে, একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পরস্পরকে সাহায্য করতে পারে। এটি অলাভজনক সংগঠন, শিক্ষা, চাকরিসহ নানা ক্ষেত্রে কাজে লাগবে। আমি বাংলাদেশের তরুণদের সঙ্গে নিজের গল্প ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে চাই। আশা করি এর মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণেরা নিজেদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গড়তে অনুপ্রেরণা পাবে।
আপনার প্রিয় পোশাক কী?
শাড়ি। লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে নিয়মিত শাড়ি কেনা হয়।
আপনার ছোটবেলার নায়ক কে?
আমার ছোটবেলার নায়ক ছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস, মহাত্মা গান্ধী ও ব্যাটম্যান!
উদ্যোক্তা হতে কোন বিষয়টা আপনাকে উৎসাহী করেছে?
উদ্যোক্তা হওয়ার আগে আমি বুঝতে পেরেছিলাম সারা বিশ্বেই উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। আমি নিজেই সিদ্ধান্ত নিলাম যে বিষয়টি সমাধান করব এবং তা উদ্যোক্তা হয়েই। এ ক্ষেত্রে আমার মা-বাবার দারুণ উৎসাহ পেয়েছি, যা আমাকে উদ্যোক্তা হতে সাহায্য করেছে।
আপনি কি মনে করেন উদ্যোক্তা হওয়ার আগে শুরুতে কোনো ধরনের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা উচিত?
এ ক্ষেত্রে বিষয়টা একেকজনের কাছে একেক রকম। অনেকে শুরুতে কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতা অর্জনের পর উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করতে পারেন। অনেকে আবার শুরুই করেন উদ্যোক্তা হিসেবে এবং নিজের চেষ্টায় নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন।
আপনি কেন সামাজিক নেটওয়ার্ক তৈরির বিষয়ে উদ্যোগী হলেন? এ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুক আপনাকে কীভাবে সাহায্য করছে?
আমি যখন সান মাইক্রোসিস্টেমসে চাকরি করি তখন আমার প্রথম উদ্যোগ ‘দ্য কালচারাল কানেক্ট’-এর আইডিয়া মাথায় আসে এবং সেটা শুরু করি। আমার চেষ্টা ছিল তরুণ পেশাজীবীদের গল্পগুলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে। এ ক্ষেত্রে লাভজনক ও অলাভজনক দুই ধরনের প্রতিষ্ঠানের তরুণেরাই ছিল। এতে আমরা দারুণ সফল হই এবং পরবর্তী সময়ে এ বিষয়গুলো সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতেই চালু করি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক সুমাজি ডট কম (www.sumazi.com)। এ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুক আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। কারণ ফেসবুক সম্পর্কে সারা বিশ্বের অনেকেই এখন জানে এবং ব্যবহারও করে। তবে সুমাজি ডট কম শুধু যোগাযোগই নয়, ব্যবহারকারীদের মধ্যে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়তে সাহায্য করবে।
আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বলুন? শুরুর কথা। শুরুতে অর্থ পেলেন কীভাবে?
নিজেদের মধ্যে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরির আর ভালো কোনো উপায় ছিল না বলেই আমি ‘সুমাজি ডট কম’ চালু করি। নতুন উদ্যোক্তাদের এক হাজার ২০০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে টেকক্রান্স সেরা ২৫টি দল নির্বাচিত করে। আমাদের দলটি সেখানে ‘স্টার্টআপ মোস্ট লাইকলি টু চেঞ্জ দ্য ওয়ার্ল্ড’ পুরস্কার অর্জন করে। আমার ব্যক্তি বিনিয়োগকারী ও সফল উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে প্রাথমিক বিনিয়োগ সংগ্রহ করি এবং বর্তমানে সারা বিশ্বে আমাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছি।
তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য আপনার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ কী?
মূল কাজের দিকে দৃষ্টি দেওয়া। একটা দল গড়া এবং উদ্যম না হারানো।
অনলাইনে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন:
মুনির হাসান ও নুরুন্নবী চৌধুরী

No comments

Powered by Blogger.