নিজের ঘরেও নগরবাসী নিরাপত্তা পাবে না?-দিনদুপুরে দুর্ধর্ষ ডাকাতি

নাগরিক জীবনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কমতি নেই। বিপুল অর্থ ব্যয়ে আধুনিক আবাসন প্রকল্পে ফ্ল্যাট কিনেও নিরাপত্তা মিলল না। তাহলে সাধারণ নগরবাসীর নিরাপত্তার অবস্থা কী, সেটা অনুমান করা কঠিন নয়। রাজধানীর বাংলামোটরে ইস্টার্ন টাওয়ারের আবাসিক কমপ্লেক্সে নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী থাকা সত্ত্বেও একদল ডাকাত দিনদুপুরে বাসায় ঢুকে বাসিন্দাদের

অস্ত্রের মুখে জিম্মি করল। বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে শেষে তারা নিরাপদে চলেও যেতে পারল। পুরো ঘটনাটি যেমন বিস্ময়কর, তেমনি উদ্বেগজনক।
এ কথা সত্যি যে, সমাজের নানা ক্ষেত্রে অপরাধ ও দুর্নীতির চিত্র ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ও মানবিক মূল্যবোধের ঘাটতির কারণে অপরাধ তৎপরতার বিস্তার ঘটেছে। অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার ঘটনাও বিপুল। তাই বলে নিজের ঘরেও কি নিরাপদ বোধ করতে পারবে না নগরবাসী? আধুনিক ও নিরাপদ ফ্ল্যাটেও নিরাপদে না থাকা গেলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?
যারা অপরাধ দমনের দায়িত্বে নিয়োজিত, তাদের ভাবমূর্তির সংকট রয়েছে। দক্ষতার ঘাটতি যেমন আছে, তেমনি অপরাধীদের সঙ্গে তাদের অনেকের জড়িত থাকার কথা সমাজে ব্যাপক প্রচলিত। অপরাধীরা যতটা তৎপর এবং নতুন ও সৃজনশীল কৌশল ব্যবহার করে, অনেক ক্ষেত্রে ততটা তৎপরতা ও সৃজনশীলতা দেখাতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু প্রতিকারের ব্যবস্থা করতে হবে রাষ্ট্রকেই। পুলিশ মানুষের যথেষ্ট আস্থা অর্জন করতে না পারলে অপরাধের লাগাম টেনে ধরা কঠিন। পুলিশের ভেতরকার অসুখ সারাতে তাদের নৈতিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত করা ও জনসেবার মানসিকতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন।
ঘরকে মানুষ সবচেয়ে নিরাপদ ও আপন জায়গা গণ্য করে। সেটার নিরাপত্তা সবার কাছে বড় প্রত্যাশিত। বাংলামোটরের আবাসন কমপ্লেক্সটিতে আধুনিক নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও এ ঘটনা কী করে সম্ভব হলো, তা খতিয়ে দেখা দরকার। ঘটনাটির সঙ্গে যারাই জড়িত, তাদের খুঁজে বের করতে হবে। কাজটি কঠিন হওয়ার কথা নয়। অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে এ ধরনের অপকর্মের পুনরাবৃত্তির পথ রোধ করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.