দাখিলা বই-তহশিল অফিসগুলোতে দ্রুত সরবরাহ হোক

ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা থেকে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে থাকে। এই খাজনা কিংবা রাজস্ব আদায় সরকারের অর্থনৈতিক খাতকে শক্তিশালী করে। তার চেয়ে বড় কথা, ভূমি মালিকের মালিকানা নিশ্চিত করার জন্যও প্রমাণ হিসেবে এই খাজনার রসিদটি কাজে লাগে। খাজনা প্রদানের মাধ্যমে মালিকানার ধারাবাহিকতাও নিশ্চিত করে। জমি বেচাকেনা করার জন্য অতিজরুরি প্রয়োজনীয় এই খাজনা রসিদটি পেতে যাতে কারো অসুবিধা না


হয়_এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু বাংলাদেশে কোথাও মাসাধিককাল, কোথাও ১৫ দিন ধরে দাখিলা বই না থাকার খবর প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকান্তরে। দাখিলা বই না থাকার জন্য যেসব কারণকে দায়ী করা হয়েছে, সেগুলো যৌক্তিক বলে মনে করা যায় না। বলা হচ্ছে, বিজি প্রেস যথাসময়ে মুদ্রণের কাজটি সম্পন্ন করেনি। কিন্তু এও জানা গেছে, ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাছে কয়েক কোটি টাকা বকেয়া পাওনা আছে বিজি প্রেসের। এই দুটি মন্তব্যই এত বড় একটি কাজের কারণে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এখানে দুটি বিভাগের অবহেলার বিষয়টি প্রথমেই মনে আসে। তহশিল অফিসগুলোতে দাখিলা বই না থাকার জন্য শুধু বিজি প্রেসের ওপর দায় দিলে চলবে না। বই শেষ হয়ে যাবে, এটা সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো আগে থেকেই জানার কথা। তাই বইটি শেষ হওয়ার দু-এক মাস আগে অর্থাৎ প্রয়োজনীয় সময় হাতে থাকতে কেন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, সে বিষয়টিও ভেবে দেখতে হবে।
বিজি প্রেসের কথায় বোঝা যায়, টাকা পাওয়ার বিষয়টি এখানে মূল নয়। তাহলে বিজি প্রেসকেই বলা দরকার যে এখনো কোন কারণে বই ছাপার কাজ শেষ হলো না। এতে রাষ্ট্রের যে ক্ষতি হয়েছে, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জমির মালিকদের। জমির মালিক নিজের প্রয়োজনে জমি বিক্রি করবে। এ কাজে সহযোগিতা করবে রাষ্ট্র। ব্যাংকঋণ নেওয়ার জন্য এই খাজনার রসিদটি জরুরি।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের এসব ঘাটতি নতুন কিছু নয়। প্রায়ই বালাম বই না থাকার সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সবই আসলে অব্যবস্থাপনার প্রমাণ। সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাখিলা বই ছাপিয়ে প্রতিটি তহশিল অফিসে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হোক। গ্রামের মানুষ যাতে আর হয়রানিতে না পড়ে, সেদিকেও তাকানো উচিত।

No comments

Powered by Blogger.