প্রবীণদের জন্য আল্লাহর ঘোষণা by মাহফুজ আবেদ

মাদের সমাজ থেকে অনেক প্রথাই এখন শিথিল হয়ে গেছে। পিতা-মাতা সন্তানকে বড় করে তোলেন। বৃদ্ধাবস্থায় সেই পিতা-মাতার সেবা করা সন্তানের নৈতিক দায়িত্ব। অথচ এ দায়িত্বের কথা অনেকেই ভুলে যেতে বসেছে। বৃদ্ধ পিতা-মাতা যেন নিজ ঘরেই পরবাসী। ক্ষেত্রবিশেষে বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে উপযুক্ত মর্যাদা না দেওয়ার পীড়াদায়ক অভিযোগও শোনা যায়। অনেক দুরাচার তাদের গায়ে হাত দিতেও কুণ্ঠবোধ করে না। অথচ কোরআনুল কারিমে বলা


হয়েছে, 'হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও, যাতে আমি তোমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি। আমার প্রতি ও আমার পিতা-মাতার প্রতি তুমি যে অনুগ্রহ করেছ, তার জন্য এবং যাতে আমি সৎকাজ করতে পারি, যা তুমি পছন্দ করো।' (সূরা আল আহকাফ : ১৫) এই আয়াতের আলোকে বলতে হয়, প্রবীণদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করা মুসলমানদের ঐতিহ্যের অংশবিশেষ। হজরত উসমান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ণনা করেন_ হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, 'মুমিন বান্দা যখন চলি্লশ বছর বয়সে উপনীত হয়, তখন আল্লাহতায়ালা তার হিসাব-নিকাশ সহজ করে দেন। যখন ষাট বছরে উপনীত হয়, তখন আল্লাহতায়ালা তাকে আল্লাহভীরুতা দান করেন। যখন সত্তর বছরে উপনীত হয়, তখন আসমানের অধিবাসীরা তাকে ভালোবাসতে শুরু করে। যখন সে আশি বছরে উপনীত হয়, আল্লাহতায়ালা তখন তার ভালো কাজগুলোকে সুবিন্যস্ত করে দেন এবং তার খারাপ কাজগুলোকে মিটিয়ে দেন। আর যখন সে নব্বই বছর বয়সে উপনীত হয়, তখন আল্লাহতায়ালা তার আগে-পরের সব গুনাহ মাফ করে দেন এবং তার পরিবারের জন্য সুপারিশ করার অধিকার প্রদান করেন এবং আসমানে তার নামের সঙ্গে লেখা হয়_ এই বান্দা পৃথিবীতে আল্লাহর জন্য আবদ্ধ।' (ইবনে কাসির, মুসনাদে আহমদ)
প্রবীণদের জন্য এ হাদিস সান্ত্বনা ও অনুপ্রেরণাদায়ক। এ হাদিস থেকে আমরা প্রবীণদের যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান অনুধাবন করতে পারি। অতএব বয়সে বড় ও প্রবীণদের মর্যাদা দেওয়া আমাদের প্রত্যেকের নৈতিক দায়িত্ব। তাই তাদের সবসময় শ্রদ্ধা ও সম্মান করতে হবে। তাদের বৃদ্ধাশ্রমে না পাঠিয়ে নিজ পরিবার বা ঘরেই সেবা-যত্নের ব্যবস্থা করতে হবে। এটাই ইমান, ইসলাম ও মানবতার দাবি।

No comments

Powered by Blogger.