চট্টগ্রাম বন্দরকে দুর্নীতিমুক্ত করার সুপারিশ

ব্যবসা বাণিজ্যের সম্প্রসারণে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম বন্দরকে দুর্নীতিমুক্ত করার সুপারিশ করেছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। একইসঙ্গে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালযের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়। গতকাল সংসদ সচিবালয়ে কমিটির বৈঠক শেষে এ তথ্য জানানো হয়। বন্দরের যন্ত্র সামগ্রী কেনাকাটা, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অসচ্ছতা ও সরকার বিরোধী কর্মকা ের অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষিতে কমিটির পক্ষ থেকে এ সুপারিশ করা হয়েছে। এদিকে বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল নিজাম উদ্দিন এর বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও জামায়াত ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে কমিটিতে। এ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছেন এমপিরা। এ প্রসঙ্গে কমিটির সদস্য আনোয়ারুল আজিম (আনার) বলেন, বন্দর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ দুঃখজনক। আমরা বন্দরকে সব ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি থেকে মুক্ত করার কথা বলেছি। বৈঠক সূত্র জানায়, নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বন্দরে তিনটি জাহাজ ক্রয়ে ৩৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। উত্থাপিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৮-২০ বছরের পুরাতন জাহাজ সকল নিয়ম উপেক্ষা করে ২০ কোটি টাকার জাহাজ ৫৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ক্রয় করেছেন তার ভায়রা জিয়াউল হক চিশতীর মাধ্যমে। এছাড়া একই কোম্পানিকে বিনা টেন্ডারে জাহাজের ম্যানেজমেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে। তাছাড়া জাহাজ বিদেশ থেকে আনার জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের ৩০-৪০ জন কর্মকর্তা দুবাই ও চায়না ভিজিট করে। তাদের বিদেশ ভিজিটের কোটি টাকা ব্যায় চট্টগ্রাম বন্দরের রাজস্ব খাত থেকে দেখানো হয়েছে। এছাড়া অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রেক্ষিতে নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের শিপিং বিভাগ থেকে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। এছাড়া বন্দরের ১০ টন মোবাইল ক্রেন কেনায় ৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ও স্ক্যানার কেনায় প্রায় ৫ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও আলোচনা হয় কমিটিতে। বৈঠকে নিজাম উদ্দিন বর্তমানে জামায়াত-বিএনপি’র সমর্থনে কাজ করছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এতে বলা হয়, সমপ্রতি নিজাম উদ্দিন লন্ডন ভ্রমণে গিয়ে জামায়াত ইসলামের লন্ডন শাখার নেতা মাহবুব আলম, আফজাল মিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেন। সেখানে গোলাম আযমের মৃত্যুর পর গায়েবানা জানাজায় অংশ নেন তিনি। সেখানে তাদের সঙ্গে গোপন মিটিংও করেন বলে জানা গেছে। জানাজায় অংশ নেয়া এবং মিটিং- এসব বিষয়ে মাহবুব আলমের সঙ্গে ছবিতেই প্রমাণ পেয়েছে কমিটি। বৈঠকে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমী এবং ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। উভয় প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা বাড়ানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। কমিটির সভাপতি মেজর (অব:) রফিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, আব্দুল হাই, নুরুল ইসলাম সুজন, এম আব্দুল লতিফ, আনোয়ারুল আজীম (আনার) এবং মমতা বেগম এডভোকেট বৈঠকে অংশ নেন।

No comments

Powered by Blogger.